এবারের ঈদকে ঘিরে এর কোনো কমতি নেই। রমজানের শুরু থেকে ঈদের বাজারকে ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতাদের দাবি এবারে রমজান মাস মে মাসের মধ্যবর্তীতে শুরু হওয়ায় এখনো আশানুরুপ জমজমাট ভাব আসেনি ঈদ বাজারে। কর্মজীবী মানুষের বেতন হওয়ার পর থেকে চলতি মাসের ৩ তারিখের পর পুরো বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
আর বেশিরভাগ ক্রেতারা বলছেন, ২০ রমজানের পর দর্জির দোকানগুলোতে কাজ না নেওয়ার কারণে এখনই শার্ট-প্যান্ট ও থ্রি-পিস পোশাকের জন্য থান-কাপড়, বাহারি নকশার থ্রি-পিস কিনে নিচ্ছেন তারা। তবে যারা রেডিমেট পোশাক কিনবেন তারা এখনও বাজার চষে বেড়াচ্ছেন।
কাপড় বিক্রেতাদরা জানান, গতবারের তুলনায় এবছর ঢাকায় দাম বেশি আর কেরিং খরচ ভাট ট্যাক্স বেশি থাকায় দাম একটু বেশি। এবার বাজারে গুজরাটি, থাই-কটন, চায়না লন, অর্গেন্ডি, বেলবেট, পাকিস্তানি কটনসহ বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি আইটেমের থান কাপড় সরবরাহ রয়েছে। যেগুলো গজপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫শ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি সুতি কাপড়ের মধ্যে পাকিজা বয়েল ও অরবিন্দ কাপড়ের আমদানি বেশি রয়েছে। গজপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা থেকে ৬শ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর মেয়েদের থ্রি-পিসের মধ্যে বিনয়, রাজমহল, মমতাজ, ছিমা, গ্লোছি নামক পোশাক বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। আর কারুকাজ থ্রি-পিসের সেটের মধ্যে জেট ফ্যাশন, আইডল, আইকন বিক্রি হচ্ছে ১১শ থেকে ১৮শ টাকায়। এছাড়া গাউন ২ থেকে ১০ হাজার টাকা, অ্যারোলিংক সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ১১ হাজার টাকা, মাজাককালি ৩ থেকে ৬ হাজার টাকা, গাউন প্রবাল দেড় থেকে ৩ হাজার টাকা, ইন্ডিয়ান কুর্তি ১ হাজার ৩শ থেকে আড়াইহাজার টাকা, রাশিকা গাউন ২ হাজার ৬শ থেকে ৭ হাজার টাকা, লুজ থ্রি-পিস ২৫শ থেকে ৭ হাজার ২শ টাকা, সামু সিল্ক ২ হাজার ৩শ থেকে ৩ হাজার টাকা, সামু সিল্ক ডুয়েল ৪ হাজার ৬শ থেকে ১০ হাজার টাকা, কটন গোল ফ্রক লং ৭শ থেকে ১২শ টাকাম ফ্লোর টাচ ড্রেস ২ হাজার ৩শ থেকে ৫ হাজার টাকা দর মান ও নকশা অনুযায়ী হাঁকছেন বিক্রেতারা।
ছেলেদের শার্ট-পিসের মধ্যে অরবিন্দ ৬শ থেকে ১৪শ, রেমন্ড ১৮শ থেকে ২ হাজার, দিকজাম ও মন্টি ১ হাজার ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ব্র্যান্ডের শো-রুম রেমডেন্ড শার্ট পিস রয়েছে ১২শ থেকে ৬ হাজার টাকার মধ্যে, প্যান্ট পিস রয়েছে ১ হাজার ৮২ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে, কমপ্লিট স্যুট পিস রয়েছে ৩ হাজার ২৫৩ থেকে ৫২ হাজার টাকার মধ্যে। এদিকে কাঠপট্টির প্রিন্টের কাপড়ের বিক্রেতা মো. রিপন বাংলানিউজকে জানান, প্রিন্টের কাপড়ের বাজার ভালো থাকলে আগের মতো মানুষ পাঞ্জাবি এখন আর বানায় না। রেডিমেট পাঞ্জাবির ভিড়ে পাঞ্জাবির কাপড়ের বেচা-বিক্রি নেই বললেই চলে। আর মেয়েদের কাপরের মধ্যে নেট কাপড় ও গাউন থ্রি-পিসের বেশ চাহিদা রয়েছে।
বরিশালের চকবাজারের সৈয়দ ক্লোথের স্বত্ত্বাধীকারী সৈয়দ জামাল হোসেন নোমান, বাংলানিউজকে জানান, বরিশালে কাঠপট্টি ও চকবারের দুই শতের মতো কাপড় ও পোশাক বিক্রেতারা ঈদকে সামনে রেখে বহু আগেই ব্যাপক পোশাক ও কাপড়ের আমদানি করে থাকে। ইতোমধ্যে থান কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের সমাগম শুরু হয়ে গেছে। মে মাসের বেতন পাওয়ার পরে মার্কেট পুরোপুরি জমজমাট হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অপরদিকে ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোর বেচা-বিক্রি ঈদ বাজারের শুরু থেকেই বেশ ভালো বলে জানিয়েছেন রেমন্ড শো-রুমের ম্যানেজার সৈয়দ সুমন। তার মতে ঈদের পরে বিয়ের একটা ব্যাপার থাকে তাই শার্ট-প্যান্ট আর কমপ্লিট স্যুটের চাহিদা এখন বেশিই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৮
এমএস/এএটি