ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

জমজমাট হয়ে উঠছে বরিশালের ঈদ বাজার

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৮
জমজমাট হয়ে উঠছে বরিশালের ঈদ বাজার রুচিশীল শাড়ি বাছাই করছেন ক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: ঈদ আসতে হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটি দিন। শেষ সময়ে এসে বরিশালের ঈদ বাজারে দেখা মিলছে জমজমাট ভাব। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, যেমনটা আশা তারা করেছিলেন তেমন ক্রেতা হয়নি এবারের ঈদ বাজারে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেনাকাটায় সময়ের পরিবর্তন ঘটায় ভালো জিনিস আগেভাগেই বিক্রি হয়ে গেছে। তাই এখন পছন্দের পোশাক খুঁজে পেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে জেলার বাসিন্দার।

বরিশাল নগরের বগুড়া রোডের বাসিন্দা সায়মা সাদিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর গৃহকর্তার বেতন-বোনাস হাতে পাওয়ার পরে শপিংয়ের জন্য তৈরি হই। এবছরও ঈদ শপিংয়ের জন্য বিভিন্ন বাজার ঘোরা হচ্ছে। কিন্তু পছন্দমতো পোশাক মিলছে না। পোশাকবাজারে বাহারি পোশাকের সংকট মনে হচ্ছে। রুচিশীল জুতা বাছাই করছেন ক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরও বলেন, আগে ১৫ রমজানের পর ঈদ শপিং শুরু করতো সবাই। কিন্তু এখন মানুষ ঈদের শপিং রমজানের শুরুতেই করে ফেলেন। আর মেয়েরা রেডিমেট পোশাকের থেকে তৈরি পোশাকে ঝুঁকছেন বেশি। তাই রমজানের শুরু থেকে শপিং এবং ১০ রমজান থেকে দর্জিপাড়ায় ভিড় জমানোটা এখানকার রীতি। ফলে শেষদিকে এসে কাপড়ের বাজারে চাপ কম পড়লেও দর্জিপাড়ায় ভিড়ই বলে দেবে বাজার পরিস্থতি।

ফারজানা কবির নামে অপর এক গৃহবধূ বলেন, অগ্রিম কেনাকাটার কারণে বরিশালের বাজারে এই মুহুর্তে মনমতো কোনো পোশাকই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বাজার ঘুরে যা দেখছি, দোকানভেদে পোশাকের দরে তেমন তারতম্য নেই। কিন্তু গতবারে যে পোশাক দুই হাজার টাকায় কিনেছি এবার সেই পোশাকই বাড়তি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

রাফি নামে এক যুবক বলেন, দিন যতো যাচ্ছে বরিশালের তরুণ-তরুণীরা ব্র্যান্ডের শো-রুমমুখী হচ্ছে। তাই বরিশালে ব্র্যান্ডের শো-রুমও দিনে দিনে বাড়ছে। আর ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলোতে রুচিশীল ও নতুন নতুন পোশাক পাওয়া যায় এবং এখানে কাপরের মানও বেশ ভালো থাকে।

হিমি আক্তার নামে এক তরুণী জানান, এখন অনলাইন শপগুলোতেও বেশ ভালো মানের পোশাক পাওয়া যায়। তাই ক্রেতাদের অনেকই বিশেষ করে নারীরা অনলাইন শপগুলোর দিকে ঝুঁকছেন। যদিও এর সংখ্যাটা বরিশালে এখনও বেশ কম।

নেক্সট প্লাসের প্রোপাইটর রতন চৌধুরী জানান, রমজানের শুরুর দিকে বৃষ্টির কারণে ঈদবাজারের শুরুটা খারাপ ছিল। আর এখন প্রচণ্ড গরমের কারণে দিনের বেশিরভাগ সময়েই ক্রেতারা দোকানে আসেন না। আবার চৈত্র মাসে মূল্যহ্রাসের কারণে অনেকে আগে থেকেই কেনাকাটা করে রেখেছেন। অনেকে আবার ঢাকা কিংবা ভারতে গিয়ে কেনাকাটা করে। সবমিলিয়ে যেমনটা আশা করেছিলাম, তেমনটা বেচা-বিক্রি এখনও হয়নি।

চক বাজারের পোশাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম জানান, এবারে বরিশালের ঈদ বাজারে মেয়েদের জন্য লাছা, লং ফ্রক, স্কার্ট, ডিভাইডার সেট, ওয়েস্টার্ন ও ল্যাহেঙ্গার চাহিদা রয়েছে। ছেলেদের চাহিদা রয়েছে ভারতীয় শার্ট, প্যান্ট ও চাইনিজ টি-শার্টের ওপর।

অপরদিকে কাটপট্টির ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির লিংকু জানান, সিট কাপর ও থ্রি-পিসের কাপড়ের বাজারের বেচা-বিক্রি শেষের পথে। এখন যা ভিড় তা বেশিরভাগই রেডিমেট পোশাকের দোকানগুলোতে। কারণ দর্জি বাড়ির অর্ডার নেওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। রুচিশীল পোশাক বাছাই করছেন ক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজকোহিনুর সু-হাউসের বিক্রয় প্রতিনিধি খালেদ সিকদার জানান, জুতার বাজারে ক্রেতারা আসেন একটু শেষের দিকে। বেশিরভাগ ক্রেতাই পোশাকের সঙ্গে মানানসই নকশা ও রং মিলিয়ে জুতা পছন্দ করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গতবারের মতো এবারও তরুণীদের মাঝে গাউনের চাহিদা বেশ ভালো। দুই থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে যাবে এ পোশাক। এক থেকে ১২ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে বাহারি নামের নানান থ্রি-পিস রয়েছে। শাড়ির বাজারেও কাতান, বেনারসি, সিল্ক, তাতের কাপরের বেশ কদর রয়েছে। দেড় হাজার থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে শাড়ি।

ছেলেদের মধ্যে পাঞ্জাবির কদর দিনে দিনে বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। মূলত সুতি ও খাদি কাপরের পাঞ্জাবির কদর বেশি। বরিশালের বাজারে এক হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত দরের পাঞ্জাবি বেশি বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া রেডিমেট শার্ট ও টি-শার্টের বাজারের ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো বেশ ভালো বেচাবিক্রি করছে।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৮
এমএস/এএটি/এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।