রোববার (১০ জুন) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর দৃক বেঙ্গল মসলিনের গবেষক সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে এটি গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, সচিব মো. শওকত নবী প্রমুখ।
মসলিন খণ্ডটি নিয়ে অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন জাতীয় কারুশিল্প পরিষদের রুবী গজনবী ও ড. মো. ফরিদ উদ্দিন।
স্বাগত বক্তব্যে জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, জাদুঘরের প্রধান কাজ হচ্ছে সংগ্রহ করা। সাম্প্রতিককালে যে পরিমাণ সংগ্রহ হয়েছে, তা অনন্য। আশির দশকের পর দীর্ঘদিন এতোটা হয়নি। ২০১৬ সালের আয়োজিত বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর মসলিন প্রদর্শনী সারাবিশ্বে সাড়া ফেলেছিল। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের মসলিন রয়েছে। কিন্তু তার প্রধান উৎস ঢাকাতে তাও নেই। তবে আসল মসলিন পুনরায় তৈরি করতে আর খুব বেশি দেরি নেই।
রুবী গজনবী বলেন, ব্রিটিশরা পুটি কার্পাস গাছেন বীজ পাওয়ার পরও এতো দূর আগাতে পারেনি যতোটা পেরেছে দৃক, কিন্তু এখন দরকার আরো পৃষ্টপোষকতা। গত কয়েক বছর ধরে চিন্তাভাবনা চলছে ও তাঁতিদের সঙ্গে মতবিনিময় হচ্ছে। যে ডিজাইনগুলো হারিয়ে গেছে, সেগুলো আমরা পুনরায় তুলে আনার চেষ্টা করছি।
মসলিনের গবেষক সাইফুল ইসলাম বলেন, অনেক অঞ্চলে মসলিন উৎপাদিত হতো। কিন্তু বাংলার মসলিনের চাহিদা ছিলো বিশ্বব্যাপী। এ শিল্পের তুলা গাছ সবখানে পাওয়া যায় না। এ গাছের চাষ করা হয় না প্রায় ১৮০ বছরের উপরে। বর্তমানে আবার এ গাছ উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। এ চেষ্টার ফসল ৪শ কাউন্টের শাড়ি তাঁতিরা উৎপাদন করতে পারবেন।
সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মসলিন এদেশের গর্বের ইতিহাস যা ইংরেজদের ইংরেজদের বিমাতা সুলভ আচরণের কারণে বিলীন হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর নিজেও এ শিল্পের পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারে আগ্রহী। সবাইকে সম্মিল্লিতভাবে কাজ করলেই কেবল সাফল্য আসবে। আমাদের দেশের তাঁতশিল্পীরা এতো দক্ষতার সঙ্গে মসলিন তৈরি করতেন যে, তা পৃথিবীর আর কোথাও হয়নি। পাশ্চাতে তারা নিজেদের মতো করে মসলিন তৈরি করছেন বলে দাবি করেন, তবে তা আদৌ মসলিন কিনা তাতে সন্দেহ আছে। নতুন এ সংগ্রহ জাদুঘরের সংগ্রহকে আরো সমৃদ্ধ করলো।
শিগগিরই জাদুঘরের টেক্সটাইল গ্যালারিতে নতুন এটি প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলেও জানানো হয় অনুষ্ঠানে। এটি নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে বর্তমানে মোট মসলিনের সংখ্যা দাঁড়ালো দু’টি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এইচএমএস/এএটি