বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ ছয় প্রকল্পের জন্য ঋণ চুক্তি সই হয়।
চুক্তিতে ইআরডি সচিব শফিকুল আযম এবং জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোইয়াশু ইজুমি নিজ নিজ পক্ষে সই করেন।
জানা যায়, যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পে দুই হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা ঋণ দেবে জাপান। যমুনায় নতুন রেলসেতু নির্মাণের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হবে। একই সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে ভারী মালামাল পরিবহনে কন্টেইনার পরিবহন বাড়ানো হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলসেতুটি বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ রেলওয়ের কন্টেইনারসমূহ দেশ-বিদেশে পরিবহন করা সহজ হবে। এতে দেশের তৃণমূল পর্যায়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা বাড়বে।
উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দ্রুতগামী রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে। নতুন রেলসেতুর মাধ্যমে গ্যাস সংযোগও ব্যবস্থা করা হবে। কন্টেইনার পরিবহনের সংখ্যা বাড়বে কয়েকগুণ।
সূত্র জানায়, প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৭৪০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ২০১ কোটি ৫৭ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ৭ হাজার ৭২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই প্রকল্পের আওতায় ঋণ দিচ্ছে জাইকা।
এদিকে ‘মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র’ নির্মাণ প্রকল্পে ৫ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা দিয়েছে সংস্থাটি। মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি ইউনিট থেকে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)। ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জুলাই মাসে চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।
২০২৩ সালের জুন মাসে এ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। প্রকল্পে ২৮ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে জাইকা।
মাতারবাড়ী পোর্ট উন্নয়নে ২০৩ কোটি টাকা দিয়েছে সংস্থাটি। সেখানে একটি বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের জন্য পরামর্শক সেবায় এই টাকা ব্যয় হবে।
এছাড়া ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট লাইন-৫ প্রকল্পে ৫৬২ কোটি ছাড়াও প্রকল্পটিতে আরো ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা দিয়েছে জাইকা।
লাইন-৫ রুটটি ২০৩০ সালের মধ্যে হেমায়েতপুর-আমিনবাজার- গাবতলী–মিরপুর-০১-মিরপুর-১০-কচুক্ষেত-বনানী-গুলশান-নতুনবাজার হয়ে ভাটারা যাবে। এই রুটের মোট দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। এই রুট নির্মাণে পরামর্শক সেবায় ঋণের টাকা ব্যয় হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, উত্তরা মেট্রোরেল প্রকল্পের তৃতীয় পর্ব অর্থাৎ দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশ ২০১৯ সালের মধ্যেই উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যে আট প্যাকেজে ভাগ করে কাজ চলছে, এই অংশটুকু প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ-৪-এর অংশ।
সেজন্য প্রকল্পের এই অংশটির কাজই ধরা হয়েছে আগে। প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতেই এই মেগা ঋণ দিচ্ছে জাইকা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
এমআইএস/এমএ