সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১২ সালে ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বারবার সময় বাড়ানোর পর চলতি বছরের ডিসেম্বরে ‘গাজীপুর থেকে ২০ মিনিটে ঢাকা’ নামে পরিচিত এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
প্রকল্পের পরিচালক সানাউল হক বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। সেজন্য আশা করছি ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারবো। এজন্য সময়ের আবেদন করা হয়েছে। সময় বাড়ায় প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পের এখনও অনেক কাজ বাকি। বর্তমান সময় পর্যন্ত মোট অগ্রগতি ২০ শতাংশ। সমস্ত কাজ শেষ করতে আরও সময় ও ব্যয় প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগেও জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনসহ দুইবার সময় ও ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৪ হাজার ২৬৪ কোটি ৮২ লাখ ১৪ টাকা। আর সময় বাড়ছে ২০২০ সাল ৩০ জুন পর্যন্ত।
প্রথমে ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু পরে তা ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সর্বশেষ মূল প্রকল্প নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা। গত ছয় বছরে ব্যয় হয়েছে ১৩৮ কোটি টাকা। এ ব্যয় হয়েছে সড়ক প্রশস্তকরণ, সার্ভিস সড়ক ও গাজীপুরে তিন কিলোমিটার ড্রেনেজ নির্মাণ, আট লেনের টঙ্গী সেতু ও ফ্লাইওভার নির্মাণে।
সরকারের পাশাপাশি এই প্রকল্পে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ফরাসি দাতা সংস্থা এএফডি ও গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ) অর্থায়ন করছে।
প্রকল্প নির্মাণের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের আওতায় ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার আলাদা রুটের কাজ এক শতাংশও বাস্তবায়ন হয়নি। ছয়টি ফ্লাইওভারের ৫ শতাংশ ও উড়াল সড়কের ১০ শতাংশ কাজ এগিয়েছে। তবে ৬৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বাস ডিপোর।
আর ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা নির্মাণের কাজ ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ ও লিংক রোডের ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে এর অগ্রগতি মাত্র ২০ শতাংশ।
কর্মকর্তারা বলছেন, নানা কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। প্রথমে সওজ এর আওতায় ঢাকা বাস র্যাপিড কোম্পানি লিমিটেড এই প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে এটি আলাদা কোম্পানি হয়ে যায়। এজন্য এডিবি’র সঙ্গে ঋণ জটিলতাও তৈরি হয়। তাই প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে। এতে ৪৫ কোটি টাকা বাড়তি ব্যয় হবে।
স্বল্প খরচে দ্রুত যাতায়াত নিশ্চিতে উন্নত বিশ্বের আদলে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এমন বাস সার্ভিস চালু করছে সরকার। বাস র্যাপিট ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে চলাচলকারী বাসগুলো নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া কোথাও থামবে না।
ফলে বিমানবন্দর স্টেশন থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত ২০ দশমিক ৫০ কিলোমিটার আসা-যাওয়া করতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট।
দুইপ্রান্ত অর্থাৎ গাজীপুর ও বিমানবন্দর স্টেশনে থাকবে দুটি মূল টার্মিনাল। আর মাঝ পথে হবে ২৫টি স্টেশন। প্রতি দুই থেকে ৫ মিনিট পরপর স্টেশন থেকে বাস ছাড়বে। এ সার্ভিসে ভাড়া আদায় হবে স্মার্ট কার্ডে।
যানজট নিরসনে বিআরটি বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত ব্যবস্থা। এটি প্রথম ১৯৭৪ সালে ব্রাজিলে চালু হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কলম্বিয়ার পর প্রতিবেশী ভারতের আহমেদাবাদে চালু হয়েছে বিআরটি লেন। এবার হচ্ছে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৮
এমআইএস/এমএ