জার্মানির বিখ্যাত ক্রেন ম্যানুফ্যাকচারার লিভার (liebherr) ব্রান্ডের মোবাইল হারবার ক্রেনটির এলসি উন্মুক্তকরণের ২৫০ দিন সময়ের মধ্যে টেস্টিং কমিশনিং সম্পাদন সম্ভব হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৪২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
রোববার (২৯ জুলাই) সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মোবাইল হারবার ক্রেন সংগ্রহের লক্ষ্যে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর একেএম ফারুক হাসান এবং সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন চুক্তি সই করেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহন খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুস সামাদ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মোংলা বন্দরে বর্তমানে গিয়ারলেস জাহাজ হ্যান্ডলিং উপযোগী ক্রেন নেই। মোবাইল হারবার ক্রেনটি সংগৃহীত হলে কন্টেইনারবাহী জাহাজ/বার্জ দ্রুত হ্যান্ডলিং করা সম্ভব হবে। বিদ্যমান জেটিতে বার্ষিক অতিরিক্ত ৩৬টির বেশি কন্টেইনারবাহী জাহাজ/বার্জ হ্যান্ডলিংয়ের ফলে ১২ কোটি টাকার অধিক মুনাফা বৃদ্ধি পাবে। ঢাকাস্থ পানগাঁও হতে ছোট জাহাজ/বার্জে করে অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার পরিবহন সম্ভব হবে। ঘণ্টায় গড়ে ২০-২৫টি কন্টেইনার হ্যান্ডলিং উপযোগী এ ক্রেন বন্দরে জাহাজের টার্ন এরাউন্ড টাইম কমিয়ে আনতে সক্ষম, যা আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনগুলোকে আকৃষ্ট করবে।
এছাড়া বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্টিভেটরিং ও শ্রমিক শ্রেণির জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
অনুষ্ঠানে নৌমন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার ৬৮ বছর পর এ ধরনের একটি ক্রেন সংগ্রহ করা বর্তমান সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বর্তমান সরকারের গতিশীল নেতৃত্বে মোংলা বন্দরের লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে।
তিনি জানান, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত খালেদা জিয়ার শাসনামলে মোংলা বন্দর লোকসান করেছিল সাড়ে ১১ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মোংলা বন্দর লাভ করেছে ৯৫ কোটি টাকা।
মন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দরে এক সময় ড্রেজার ছিল না। আমরা দু’টি ড্রেজার নিজেরা কিনে খনন কাজ নিজেরা করছি। বিশেষ করে জেটির কাছে খনন নিজেরাই করি। এক সময় জেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, জেটি প্রায়ই আসতে পারতো না। এখন সেখানে বড় বড় জাহাজ এনেছি। গভীরতা সাড়ে সাত মিটার ছিল, এখন আরও এক মিটার বেড়েছে।
মোংলা বন্দরে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে গাড়ি এসেছিল ১৩৯টি, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এসেছে ৭৮৪টি। কার্গো হ্যান্ডেলিং ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে হয়েছে ১১.৩৮ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৯৭.১৬ মে. টনে উন্নীত হয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে ২১ হাজার ২০১টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪২ হাজার ৯৮৯টি।
বন্দরের রাজস্ব আয় ২০০৮-০৯ সালে ছিল ৫৮ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ২৬৬ কোটি টাকা। ওই সময়ে এসেছে ২২৫টি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৭ হাজার ২৯৫টি গাড়ি এসেছে।
বন্দর লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের ঘাটতি ছিল যন্ত্রপাতি ও ক্রেন। আমরা ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করছি।
মোংলা বন্দর উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার অগ্রাধিকার ও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪৫৪ কোটি ৪৭ লাখ ১৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৯ হতে ২০১৮ পর্যন্ত মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৪টি উন্নয়ন কর্মসূচি শেষ হয়েছে। বর্তমানে ৯টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন এবং ৬টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৮
এমআইএইচ/এসএইচ