বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে মহানগরীর মীরের ডাঙ্গায় অ্যাজাক্স জুট মিলের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মিলের শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া পাওনার একটি অংশ পরিশোধ করেন মিল মালিক আব্দুল মান্নান তালুকদার।
শ্রমিকদের চেক প্রদান পূর্ব মুহূর্তে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন বেসরকারি পাট, সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, অ্যাজাক্স জুট মিলের মহা ব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা দিনার মালিক, মিলের নন সিবিএ শ্যমিক সংগঠনের সভাপতি ইমরান মীর, সিবিএ-র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বকতিয়ার শিকদার, সহকারী সেক্রেটারি আজহার বাওয়ালি, ক্যাশিয়ার রায়হান।
বক্তব্যে বেসরকারি পাট, সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম সবুজ বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দেওয়ার জন্য সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। আশা করি তিনি পর্যায়ক্রমে সব শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা বুঝিয়ে দিবেন।
অ্যাজাক্স জুট মিলের মহাব্যবস্থাপক আব্দুল আলিম বলেন, সাবিল গ্রুপ মিলটির দায়িত্বভার নেওয়ার পর আমরা শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে শুরু করি। এখন পর্যন্ত ১৬ শতাধিক শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে তাদের পুরো পাওনা বুঝিয়ে দিয়েছি। এ ঈদে মোট ৫৭৬ জন শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে চেক ও নগদ অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাজাক্স জুট মিলের মালিক আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, ব্যাংক ঋণ ও বিভিন্ন দেনায় জর্জরিত মিলটি হাতে নেয়ার পর থেকে আমি সোনালী ব্যাংক, বিদ্যুৎ ও সিটি করপোরেশনের অনেক পাওনা পরিশোধ করেছি। শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও অনেক টাকা পরিশোধ করেছি। পর্যায়ক্রমে সব শ্রমিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পাওনা দিয়ে দিব। তারপর এ মিলটি আমরা চালু করব। মিলটি উৎপাদনে গেলে এখানে ৫ হাজারের অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সঙ্গে সঙ্গে মিলের উৎপাদিত পণ্য রফতানি করে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি মিলে চারবার মিলটির মালিকানা হস্তান্তর হয়। কিন্তু কোনো মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়নি। পরে শ্রমিকদের আন্দোলন, মিলে লোকসানসহ বিভিন্ন কারণে ২০১৪ সালের ২১ মে বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। এতে দুই হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। ফলে মানবেতর জীবন শুরু হয় মিলটির শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের।
পরে ২০১৫ সালরে ২৪ ডিসেম্বর সাবিল গ্রুপ নামে একটি গ্রুপ মিলটির দায়ত্বিভার নেয়। এরপর ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি মিল চত্বরে শ্রমিক সমাবেশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানকিভাবে মিলের দায়িত্ব বুঝে নেয় সাবিল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পর্যায়ক্রমে মিলের শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬ , ২০১৮
এমআরএম/এসএইচ