ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ঝালকাঠির কামারপট্টিতে বিরামহীনভাবে চলছে হাপর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
ঝালকাঠির কামারপট্টিতে বিরামহীনভাবে চলছে হাপর ব্যস্ত কামারপট্টি-ছবি-বাংলানিউজ

ঝালকাঠি: ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঝালকাঠির লৌহ কারিগররা। দিন-রাত গরমে লোহার ওপর হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত থাকছে কামারপট্টিগুলো, সঙ্গে বিরামহীনভাবে হাপরও চলছে।

শেষ  সময়ে এসে নতুন করে ছুরি, চাপাতি, দা, বটি, ছোট চাকু তৈরির পাশাপাশি পুরাতন সামগ্রীতে নতুন করে শান দেওয়ার কাজ বেড়ে যাওয়ায় কামারদের যেন দম ফেলারও সময় হচ্ছে না। অনেক সময় খাওয়া-দাওয়া ভুলে গিয়ে অবিরাম কাজ করতে হচ্ছে তাদের।

ক্রেতারাও তাদের পছন্দের ছুরি, চাপাতি, কুড়াল, বটি ও মাংস কাটার জন্য গাছের গুঁড়ি (টুকরো) কেনার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।  

তবে বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে এসব সরঞ্জামের দাম অনেকটাই বেশি বলে দাবি করেছেন ক্রেতারা। আর কামাররা বলছেন, কয়লা লোহাসহ কাঁচামালের দাম দিনে দিনে বেড়েই চলেছে, সে তুলনায় দাম তেমন একটা বাড়েনি। শ্রম অনুযায়ী মজুরিও ওঠে না অনেক ক্ষেত্রে।

লৌহ শিল্পের কারিগররা জানান, সারাবছর যত পণ্য বিক্রি হয় তার থেকে হিসেবে বেশিই বিক্রি হয় কোরবানিতে। পণ্যের দাম দিনে দিনে বাড়তে থাকায় এখন অনেকেই পুরাতন জিনিস সংগ্রহ করে রাখেন। যা নিয়ে কোরবানির আগে শান দিতে চলে আসেন কেউ কেউ, আবার নতুন কেনার মধ্যেও এক শ্রেণির মানুষের আলাদা আগ্রহ রয়েছে।

ব্যবসায়ী সনাতন কর্মকার জানান, সারাবছর কামারপাড়ায় তেমন একটা ব্যস্ততা না থাকলেও কোরবানির ঈদ এলে কাজের চাপ যেমন বাড়ে, তেমনি বিক্রিও বেড়ে যায়।  

মহসিন নামের এক ক্রেতা জানান, বছর বছর কোরবানির পশু জবাইয়ের অনুষঙ্গের দাম বাড়ছে। গতবারের চেয়ে এবারেও দা, বটির দর কিছুটা বেড়েছে। আবার পুরাতন দা, বটি মেরামত বা শান দিতে গিয়ে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে।

বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে রাজাপুর উপজেলা সদরের দীপক কর্মকার জানান, এক সময় কামারদের যে কদর ছিল তা এখন আর নেই। তারপরও সবকিছু ছাপিয়ে কোরবানির সময় আমরা একটু আশাবাদী হই।

তিনি জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতির আবিষ্কারের ফলে আমাদের তৈরি যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষের আকর্ষণ কমছে। যেমন প্রযুক্তি নির্ভর কৃষিতে লোহার তৈরি পুরনো সব উপকরণের চল এখন আর নেই বললেই চলে। তেমনি এখন রেডিমেট অনেক কিছুই পাওয়া যায়, যা অনেকটাই সহজলভ্য। তাই এ শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের নতুন উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

ঝালকাঠির বিভিন্ন বাজারে প্রতিটি দা বিক্রি হচ্ছে ৪শ’ টাকা, ছোট ছুরি ১শ’থেকে দেড়শ টাকা, বটি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা, চাপাতি ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা দরে। তবে লোহার পাশাপাশি স্প্রিং কিংবা স্টিলের ছুরি-চাকুও লোকজনকে আকৃষ্ট করছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, ১৯ আগস্ট, ২০১৮
এমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।