অনেক সময় স্কুলের শিক্ষিকা সাহায্য করলেও সবার সে সৌভাগ্য হয় না। মা, বড়বোন, বান্ধবী, স্কুলের আয়া এদের কাছ থেকেই যা জানার; অনেক সময় তাও থাকে ভুলে ভরা।
জীবনের শুরুর দিকের পিরিয়ডের অভিজ্ঞতা যেনো কষ্টের আর ভুলের না হয় সেজন্য ‘সেনোরা’ দীর্ঘ এক যুগ ধরে চালিয়ে আসছে ‘স্কুল প্রোগ্রাম’। লৌহজংয়ের এক গার্লস স্কুলে প্রথম যখন প্রোগ্রামটি শুরু হয় স্কুলের মেয়েরা, শিক্ষিকারা ভাবতেই পারেননি যে পিরিয়ড নিয়ে এমন স্বতঃস্ফূর্ত আলোচনা হওয়া সম্ভব। স্কুলের সেই শিশু, কিশোরীরা লাজুক মুখে যখন শুনে নিচ্ছিলো স্বাভাবিক এই শারীরিক অবস্থার বর্ণনা তখন তাদের গালে লাল আভার আড়ালেও উঁকি দিচ্ছিলো হাফ ছেড়ে বাঁচার আনন্দ।
কত সহজেই পিরিয়ডের মতো স্বাভাবিক এই প্রক্রিয়াটি ম্যানেজ করা সম্ভব এটা ভেবেই তারা ছিলো উল্লসিত। তারপর থেকে প্রতি সপ্তাহেই কোনো না কোনো স্কুলে সেনোরা চালিয়ে আসছে এই স্কুল প্রোগ্রাম।
প্রোগ্রামের দিন পরিচিতিমূলক পর্বের শেষে একটি অডিও ভিজ্যুয়াল দেখিয়ে ছাত্রীদের বোঝানো হয় নারী শরীরের খুঁটিনাটি। তারপর একজন গাইনি ডাক্তার পিরিয়ড নিয়ে বিস্তারিত বলেন। ছাত্রীদের যেকোনো প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি। সেনোরার কেয়ার লাইন নম্বরের (০৮০০০৮৮৮০০০) মাধ্যমে ছাত্রীরা কি ধরনের সহায়তা পেতে পারে সে বিষয়েও বিস্তারিত বলা হয়। প্রোগ্রামটি শেষে একজন ছাত্রী স্বাস্থ্যকরভাবে পিরিয়ড ম্যানেজ করা শেখে আর শেখে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা- পিরিয়ড কোনো ট্যাবু নয়।
সেই এক যুগ আগে শুরু হওয়া এই স্কুল প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেনোরা প্রায় ৩৭ লাখ মেয়েকে দিয়েছে পিরিয়ড বিষয়ে সচেতনতা। এ বছরও আগস্ট পর্যন্ত তিনশ’রও বেশি স্কুলে এই প্রোগ্রামটি চলছে। ভবিষ্যতেও স্কুলগুলোয় প্রোগ্রামটি চলতে থাকবে এমনটাই জানিয়েছেন সেনোরা’র ব্র্যান্ড কর্মকর্তা।
হবিগঞ্জ গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষার্থী শমী জানায়, বাসায় প্রথম মায়ের কাছেই সে ভাসাভাসা পিরিয়ড বিষয়ে জানে। তবে স্কুল প্রোগ্রামটির পর সে এ বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন হয়। একইসঙ্গে সে জানায় যে শুধু স্কুলে নয় বরং ঘরে ঘরেই হওয়া উচিত এমন উদ্যোগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
পিআর/জেডএস