এসব চামড়ার মধ্যে পশুর দাম ভেদে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়। যেমন লাখ থেকে ওপরে কেনা দামের ষাঁড়ের চামড়া গ্রাম-পাড়া ও মহল্লা থেকে তিনি সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন।
আমজাদ হোসেন, রফিকুল আলম, মোতাহার আলীসহ একাধিক মৌসুমী ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে এমনই তথ্য উঠে আসে।
এসব মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বাংলানিউজকে জানান, বুধবার (২২ আগস্ট) পুরোদিন ও বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত শহরের আশপাশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন গ্রাম-পাড়া ও মহল্লা থেকে তারা প্রত্যেকবারের মতো এবারও একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে কোরবানির পশুর চামড়া কিনেছেন। পরে আড়তদারের কাছে তা বিক্রি করেন। কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী সামান্য লাভ করতে পারলেও সিংহভাগ ব্যবসায়ীর লোকসান গুণতে হয়েছে।
তাদের ভাষায়, গত ১০ বছরের মধ্যে বগুড়ায় এবার চামড়ার দাম ছিল একেবারেই কম। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও ঢাকার ট্যানারি মালিকদের বেঁধে দেওয়া দামের কারণে জেলার মাঠপর্যায়ে ও শহরের বাজারে কম দামে কোরবানির পশুর চামড়া বেচাকেনা হয়েছে।
ট্যানারি মালিক ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট চামড়ার বাজার ধসের মূল কারণ। আর এতে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই চামড়া কেনাবেচা হয়েছে নামমাত্র মূল্যে। জেলা চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতি বাজার ধসের জন্য ঢাকায় ট্যানারি স্থানান্তর ও ঈদের আগে ট্যানারি থেকে টাকা সরবরাহ না করাকে দায়ী করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে চামড়া ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ফরিয়া, ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কিনে থাকেন। লাভের আশায় ধারদেনা করে এবারও তারা কোরবানির চামড়া কেনেন। চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংগঠনগুলোর বেঁধে দেওয়া দামের কারণে সকাল থেকেই বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ও গ্রামাঞ্চলে কমদামে চামড়া বেচাকেনা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে যেভাবে কমদামে চামড়া কিনেছে ফরিয়া ব্যবসায়ীরা, শহর পর্যায়ে তার চেয়ে আরও কম দামে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে চামড়া কেনার পর অনেকেই সেই চামড়া শহরে বিক্রি করতে এসে চরম বিপাকে পড়ে যান। এ দোকান ও দোকান ঘুরে শেষ অবধি লোকসান গুণে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বগুড়ায় চামড়ার বাজারখ্যাত বাদুড়তলা, চকসূত্রাপুর, চকযাদু রোড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকা। এসব এলাকায় বড় আকৃতির গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা, মাঝারি আকৃতির ৫০০-৭০০ টাকা। এছাড়া ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে আকৃতি ভেদে প্রতিটি ৩০ থেকে ৭০ টাকা।
চামড়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ট্যানারি মালিক ও বড় ব্যবসায়ীরা এবার ঈদের আগে সিন্ডিকেট করে চামড়া কেনার জন্য কোনো টাকা সরবরাহ করেনি। ফলে কম দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
বগুড়া জেলা চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার বাংলানিউজকে জানান, ঢাকায় ট্যানারি স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের টাকা ট্যানারি মালিকরা আটকে রেখেছেন। আর এবার চামড়ার বাজার ধসের এটাই মূল কারণ। এরপরও বগুড়ায় তুলণামূলক বেশি দামে চামড়া বেচাকেনা হয়েছে বা হচ্ছে বলে দাবি করেন চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির এ নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৮
এমবিএইচ/আরবি/