এছাড়া মশলা ও নানারকম উপকরণ দিয়ে হিমায়িত খাবার মজাদার স্বাদে তৈরি করা হয় বলে শিশু-কিশোরদের কাছে এর চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে।
হিমায়িত খাবার ব্যবসায় সংশ্লিষ্টদের মতে, সব মিলিয়ে দেশে হিমায়িত খাদ্যের বাজার বছরে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা।
জীবন যাপনের পরিবর্তন ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে হিমায়িত খাদ্যের বাজারে আসে প্রাণ। প্রাণের হিমায়িত খাদ্যের ব্র্যান্ড নাম ঝটপট। এই ব্যান্ডের অধীনে পরটা, শিংগারা, সমুচা, রুটি, চিকেন স্প্রিং রোল, চিকেন নাগেট, চিকেন পেটি, চিকেন সসেজ, পুরি, পপকর্ন, স্ট্রিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে প্রাণ ফ্রোজেন ফুডস লিমিটেড। পণ্যভেদে ৭০ টাকা থেকে ২৭০ টাকার মধ্যে ঝটপট ব্র্যান্ডের প্রাণ ফ্রোজেন ফুডস কিনতে পারছেন ক্রেতারা।
নরসিংদীর ঘোড়াশালে প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে হিমায়িত খাদ্য তৈরি করছে প্রাণ। এসব খাদ্যপণ্য উৎপাদনের জন্য প্রাণ’র ৭টি পণ্য উৎপাদন লাইন আছে। সেখানে উন্নত প্রযুক্তি ও স্বয়ংক্রিয় মেশিনে ঝটপট ব্র্যান্ডের হিমায়িত খাদ্যসমূহ উৎপাদিত হয়।
ভোক্তাদের হাতে স্বাস্থ্যকর পণ্য তুলে দিতে প্রাণ নিজেদের নির্ধারিত সরবরাহকারীর কাছ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে। প্রাণ-এর হিমায়িত খাবার টেস্টিং সল্ট ও ক্ষতিকর প্রিজারভেটিভ মুক্ত।
পণ্য উৎপাদনে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস আন্তর্জাতিক খাদ্য মান ও নির্দেশনা মেনে চলে। এরইমধ্যে বিআরসি, আইএসও সনদ অর্জন করেছে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস। বর্তমানে চাহিদার ১০ শতাংশ যোগান দিচ্ছে প্রাণ এর ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস।
হিমায়িত খাদ্যের বাজারে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডসের চাহিদা দিনদিন ব্যাপক হারে বাড়ছে। বতর্মানে ঝটপট ব্যান্ডের ফ্রোজেন ফুডসের গড় প্রবৃদ্ধি প্রায় ৩০ শতাংশ।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট এবং কুমিল্লার রিটেইল ও সুপার স্টোরগুলোতে ঝটপট ফ্রোজেন ফুড পাওয়া যাচ্ছে। কয়েকটি রিটেইল স্টোরে বিক্রি দিয়ে যাত্রা শুরু। বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার রিটেইল ও সুপার স্টোরে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস কিনতে পারছেন ক্রেতারা।
দেশের বাইরেও হিমায়িত খাদ্য পাঠাচ্ছে প্রাণ ফ্রোজেন ফুডস। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ইতালি, সাইপ্রাস, নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরে প্রাণ-এর ঝটপট পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। আগামীতে আরও বেশকিছু দেশে প্রাণ-এর ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস রপ্তানির পরিকল্পনা রয়েছে।
২০১৩ সালে মাত্র কানাডায় দুই কন্টিনার ফ্রোজেন ফুডস রফতানি করে প্রাণ। এখন প্রতি মাসেই ২০ কন্টিনার ফোজেন ফুডস পাঠাচ্ছে কোম্পানিটি। প্রতি কন্টিনারের ওজন ২৫ টন। এখানে রুটি, পরটা, সিংগারা, চিকেন নাগেট ছাড়াও নানা ধরনের সবজি যাচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম কচুরলতি, কচুরমুখী, পটল, সিম ও কাঁচা মরিচ।
প্রাণ ফ্রোজেন ফুডের অপারেশন ম্যানেজার রাসেল রেজা বলেন, হিমায়িত খাদ্য পণ্যকে সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য খুচরা বিক্রেতা পর্যায় পর্যন্ত সরবরাহের ব্যবস্থা (কোল্ড চেইন) ঠিক রাখতে হয়। সরবরাহের ব্যবস্থা ঠিক রেখে সর্বোচ্চ মানের পণ্য ক্রেতার হাতে তুলে দিতে এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্ব দেয় প্রাণ ফ্রোজেন ফুডস। দেশে হিমায়িত খাদ্যের চাহিদা বাড়লেও এখনো সীমাবদ্ধ রয়েছে উচ্চবিত্তের মধ্যে। প্রাণ-এর ঝটপট ফ্রোজেন ফুডসের লক্ষ্য হিমায়িত খাবার মধ্যবিত্ত ও সাধারণের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।
তিনি বলেন, সাশ্রয়ী দামে মানসম্মত পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহের দিকে ক্রমেই মনোযোগী হচ্ছে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস। পাশাপাশি ক্রেতারা যেন আরও সহজে ঝটপট ফ্রোজেন ফুডস পেতে পারে সেজন্য বড় বড় শহরে নিজস্ব আউটলেট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। হিমায়িত খাদ্যের বাজারে এখন ১০টির বেশি কোম্পানি আছে।
রাসেল রেজা আরো বলেন, এখানে হিমায়িত খাবার তৈরির পরেই মাইনাস ১৮ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাখা হয়। যাতে করে বিদেশে খাবারের মান ঠিক থাকে। আমরা হিমায়িত খাদ্যে তৈরিতে বসুন্ধরা ময়দা ব্যবহার করে থাকি। এই ময়দার মান অনেক ভালো। অন্যদিকে সবজিও মাঠ থেকে আমরা নিজেরাই প্রস্তুত করে থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৮
এমআইএস/এমজেএফ