ঢাকা, শুক্রবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সরবরাহ বাড়ায় স্বস্তি ফিরছে কাঁচাবাজারে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
সরবরাহ বাড়ায় স্বস্তি ফিরছে কাঁচাবাজারে বাজারদর। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শীতের সবজির সরবরাহ বাড়াতে বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে। ফলে স্বস্তি ফিরছে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। বাজারভেদে ১৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে সবজি। কয়েক মাস আগে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া কপি এখন পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১৫ টাকায়। সপ্তাহ ব্যবধানে আকারভেদে দাম কমেছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। একইসঙ্গে কমেছে ডিমের দাম। অধিকাংশ পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে হওয়ায় বেশ তৃপ্তি নিয়েই বাজার করছেন তারা। তবে বেগুন, লাউ, বরবটির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, ব্রয়লার মুরগি, মাছ, গরু ও খাসির মাংসের দাম। 

শনিবার (১৭ নভেস্বর) রাজধানীর সূত্রাপুর, শ্যামবাজার, রায়সাহেববাজার, নয়াবাজার, দয়াগঞ্জবাজার, ধূপখোলামাঠ, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারসহ রাজধানীর বেশকিছু কাঁচাবাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, শীতের সবজি ফুলকপি, শিম, মুলা, শালগম, লাউয়ের পাশাপাশি পালং শাক, লাল শাক, মুলা শাক বাজারে ভরপুর।

এরমধ্যে ফুলকপির সরবরাহ বাজারে দেখা গেছে সব থেকে বেশি। ব্যবসায়ীরা ৫০ পিস ফুলকপি আকার ও মানভেদে বিক্রি করছেন ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, যা ১ সপ্তাহ আগেও ৬০০ টাকার মতো ছিলো। অথাৎ পাইকারি বাজারে এখন ১ পিস ফুলকপির দাম ৫ থেকে ৭ টাকা। তবে খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা আকার ও মানভেদে প্রতিপিস ফুলকপি বিক্রি করছেন ১০ থেকে ৩০ টাকায়। গত সপ্তাহে যে শিম ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে, এখন তা ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। শিমের মতো লাউ, বেগুন ও বরবটির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে বাজারগুলোতে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বেগুন দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। আর ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটি দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।

এদিকে, গাজর আগের মতোই ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি। আর নতুন আসা কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। পটল ও শালগম প্রতি কেজি প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আগের সপ্তাহেও এ সবজি দু’টির দাম এমনই ছিলো। আগের সপ্তাহের মতো বাজার ও মানভেদে ১ কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। অপরিবর্তিত রয়েছে করলা, ঝিঙ্গা ও ধুন্দলের দাম। শীতের সবজির পাশাপাশি বাজারে এসেছে শাক। বাজারভেদে ১ আটি পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা। লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। ১০ থেকে ২০ টাকা আটি পাওয়া যাচ্ছে পুঁই শাক। মুলা শাক পাওয়া যাচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকায়।  

এ বিষয়ে সূত্রাপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা আবুল জানান, এখন যে ফুলকপি ১৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, ১ মাস আগেও এসব ফুলকপি প্রতিপিস ৬০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে।  

তিনি বলেন, গত সপ্তাহ থেকেই বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কমেছে। ফলে ক্রেতাদের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।  

দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ব্রয়লার মুরগি, গরু, খাসি ও মাছের। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিম ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়।

এদিকে, মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে ইলিশ মাছের সরবরাহ বাড়লেও গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়েছে। প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। ১ কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা পিস। আর ছোট আকারের ইলিশ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।  

এছাড়া গত সপ্তাহের মতোই প্রকার ও বাজারভেদে রুই মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, পাবদা মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা, চাষের ৩০০ থেকে ৪০০, মাগুর দেশি ১০০০, চাষের ৪০০ থেকে ৫০০, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০, আইড় ৬০০ থেকে ৭০০, গোলসা ৪৫০ থেকে ৫০০, চিতল ৭০০ থেকে ৮০০, পোয়ামাছ ৩০০ থেকে ৫০০, বাইলা ৭০০ থেকে ৮০০, চাষের কৈ ২৫০ থেকে ৩০০, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০, পাঙ্গাস ১২০ থেকে ১৫০, সরপুটি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

মুদিপণ্যের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি ৫০, ডাল ৪০ থেকে ৯০, তেল নোয়াবার ৫ লিটার ৪৭০ থেকে ৪৯০, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫, নাজির ৬০, মিনিকেট ৫৬, স্বর্ণা ৪২, ২৮ নম্বর ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।  

এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। রসুন ৭০ থেকে ৮০, আদা ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৮
জিসিজি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।