ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কৃষিঋণে বেশি সুদ নিচ্ছে বেসরকারি ব্যাংক: ফজলে কবির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
কৃষিঋণে বেশি সুদ নিচ্ছে বেসরকারি ব্যাংক: ফজলে কবির বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: দেশের অধিকাংশ বেসরকারি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত ৯ শতাংশের বেশি সুদে কৃষিঋণ বিতরণ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত ক্লাবে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।  

ফজলে কবির বলেন, প্রতিবছর আমরা কৃষিঋণ বিতরণের একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিলেও অধিকাংশ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক বিশেষ করে বিদেশি ব্যাংকগুলো মাইক্রো ফিন্যান্স ইনস্টিটিউটের (এমএফআই) মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করছে।

সেটা ঠিক আছে।  

‘কিন্তু ঋণের সুদ কিন্তু আর ৯ শতাংশের মধ্যে থাকছে না। সুদের হার দ্বিগুণের বেশি হারে চলে যাচ্ছে। কারণ এমএফআই-এর সুদের হার অনেক বেশি। এতে সুবিধাভোগী কৃষকদের অনেক বেশি সুদ দিতে হচ্ছে। ’

গভর্নর বলেন, আল আরাফাহ ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করতে যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ।  

ব্যাংকিং খাতে যথেষ্ঠ তারল্য রয়েছে জানিয়ে ফজলে কবির বলেন, এটি নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই। আমরা অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের মধ্যে আছি। এখন শুধু আমাদের করপোরেট রেসপন্সিবিলিটি বা ম্যানেজমেন্ট পূরণ করতে হবে। এটি আপনাদের চর্চার বিষয়।  

‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নিয়ম-কানুন করে চাপিয়ে দেওয়ার কিছু নাই। সেভাবে করলে আমাদের ব্যাংকিং খাত সব সময় ভালো থাকবে বলে আমি আশা করছি। ’

ব্যাংকগুলোর প্রতি উদ্দেশ্য করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আপনারা যথাযথভাবে ঋণ বিতরণ করবেন। যে কাজের জন্য ঋণ দিচ্ছেন, সেই কাজ যেন হয়- ঋণ বিতরণের পর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখবেন।

তিনি জানান, দেশের ব্যাংকিং খাত করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) ব্যয় প্রায় ১৯ গুণ বেড়েছে। ২০০৯ সালে মোট ব্যয় হয়েছিল ৫৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের জুন শেষে ব্যাংকগুলো সিএসআর খাতে ব্যয় করেছে ১০৪৯ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে বর্তমানের চেয়ে ব্যাংক কম ছিল ১২-১৩টি। ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি প্রশংসনীয় ব্যাপার।

সভাপতির বক্তব্যে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ লাবু বলেন, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। আল আরাফাহ ব্যাংক ইসলামী শরীয়াহ মতে চলছে। সুদমুক্ত হালাল অর্জনের জন্য সেবামূলক মনোভাব নিয়ে ই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  

স্বাগত বক্তব্যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরমান আর চৌধুরী বলেন, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠলে আমাদের এই উদ্যোগ সফল হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বৃত্তিপ্রাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মাসুদ রানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্জিয়া খানম ঝুথি, বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মো. পারভেজ রহমান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইশরাত জাহান মুন এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হুমায়ুন কবির।

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক প্রথমবারের মতো সারাদেশের উচ্চমাধ্যমিক পাস করা ২০০ মেধাবী অথচ গরিব শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিচ্ছে। আগামী ৪ বছর বৃত্তি ছাড়াও প্রতিবছর পোশাকের জন্য ৩ হাজার টাকা এবং পাঠ্য উপকরণের জন্য ৫ হাজার টাকা দেবে ব্যাংকটি। আগামী বছর থেকে ৮০০ শিক্ষার্থী এই বৃত্তি পাবেন।

অনুষ্ঠানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।