সোমবার (০৪ মার্চ) রাজধানীর শেরে বাংলানগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে নিজ কার্যালয়ে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরির সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিনি একথা জানান।
এ সময় সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমিগুলো সৌদি বিনিয়োগকারীরা নিজস্ব চাহিদা মোতাবেক ব্যবহার করতে পারবেন।
ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই দেশের ভৌগোলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিংয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে। দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
মুস্তফা কামাল বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যা ছিল এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ বিনিয়োগ আরো বৃদ্ধি করে দুইদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগগুলোর পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে। চলতি বছরে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আমরা আগামী বছর ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি।
রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রয়েছে প্রতিযোগিতামূলক বেতন-ভাতায় সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য নিবেদিত প্রাণ জনশক্তি। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে স্বল্প ব্যয় এবং আমাদের বৃহৎ শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশ সুবিধাও আছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে অধিক হারে মুনাফার সুযোগ রয়েছে বাংলাদেশে।
‘বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি, জ্বালানি, টেলিকমিউনিকেশন এবং তথ্যপ্রযুক্তি, পেট্রোকেমিক্যাল, ওষুধশিল্প, জাহাজ নির্মাণ এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো খাতে বাংলাদেশ দেশের বিভিন্ন উদীয়মান বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। ’
এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ এইচ এম আল মুতাইরি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভূতপূর্ব গতি সঞ্চারিত হওয়ায় সৌদি সরকার সন্তুষ্ট। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর সৌদিতে প্রচুর পরিমাণে মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশে গমন করে। শুধু এ বছরেই ওয়ার্ক ভিসা দেয়া হয়েছে ৮ হাজার ৩০০, ওমরা ভিসা ৮০ হাজার এবং ১ লাখ ২৮ হাজার হজ ভিসা দেয়া হয়েছে।
আগামী দিনগুলোতে দুইদেশের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, চলতি বছরের ৭ মার্চ সৌদি আরবের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করবে। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্কের দৃঢ়তাই এর বড় উদাহরণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৯
এমআইএস/এমএ