প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) জানুয়ারি) সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মোট ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এর আগে ভারতের জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনুমোদন দেওয়া হয়। এবার জাপানের জন্য অনুমোদন দেওয়া হলো। জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলের অনসাইট উন্নয়ন করা হলে ভবিষ্যতে জাপানিজ ও স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা হবে। শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে রফতানি আয় বৃদ্ধি করে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। ফলে আমাদের অর্থনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করি।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ১৭ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪৫৪ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার (জাইকা) ঋণ থেকে ২ হাজার ১২৭ কোটি ৮২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা খরচ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য ভূমি ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। সেই সঙ্গে এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপানি ও স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য নির্ধারিত এলাকার অনসাইট অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সরাসরি জাপানি ও স্থানীয় বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য জাপানি অর্থনৈতিক জোন (জেইজেড) স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ভূমি উন্নয়ন, এক্সেস রোড নির্মাণ, সংরক্ষণ খাল ও সংরক্ষণ পুকুর নির্মাণ এবং পাম্প স্টেশন স্থাপন, গ্যাস পাইপ লাইন স্থাপনের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও গ্যাস সরবরাহ, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, পাওয়ার স্টেশন ও সাব-স্টেশন,ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন এবং ২১ জন আন্তর্জাতিক ও ২২ জন স্থানীয় পরামর্শক নিয়োগ করা হবে।
এছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সারাদেশের ১ হাজার ৮১২টি মন্দির ২২৮ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কারের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ২৩ লাখ সনাতন ধর্মালম্বী উপকৃত হবেন বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
‘সমগ্রদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পে’র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে সভায়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট সেতু ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে এবং গ্রামীণ যোগাযোগ উন্নত করতে ৬১টি জেলার ২৭৫ উপজেলায় নির্মিত হবে ৩৪০টি সেতু। প্রতিটি সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ১০০ মিটার।
এ লক্ষ্যে ‘উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম সড়কে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ১ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মেয়াদে সারাদেশে সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৯
এমআইএস/জেডএস