ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজিবাজার শক্তিশালী করলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সফল হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৫ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৯
পুঁজিবাজার শক্তিশালী করলে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সফল হবে

ঢাকা: দেশে ভেঞ্চার ক্যাপিটালকে সফল করতে পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা। একই সঙ্গে তারা মনে করেন, স্টার্ট-আপ বা নতুন উদ্যোগে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করতে পারে। এতে এই খাত আরও এগিয়ে যাবে।  

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। সম্প্রতি এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

 

প্রতিবেদনে বিআইবিএম বলছে, অনেক নতুন নতুন তথ্য ও প্রযুক্তি জ্ঞানের উদ্যোগ আছে যাদের জ্ঞান ছাড়া আর কোনো জামানত নাই। তাদের তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো  বিনিয়োগ করতে পারে।
 
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী অধ্যাপক অতুল চন্দ্র পন্ডিত বলেন, নতুন উদ্যোগ যেগুলো এসেছে তথ্য প্রযুক্তি খাত থেকেই বেশি। যাদের প্রযুক্তি জ্ঞান আছে, তারা নিজেরাই উদ্যোক্তা হচ্ছে। অর্থ নেওয়ার জন্য সে তার একমাত্র নলেজটাই সরবরাহ করবে। এটি খুবই কঠিন।  

‘সেক্ষেত্রে তাকে যেতে হয় ভেঞ্চার ফাইন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। যারা আসলে নতুন আইডিয়াগুলোকে ফাইন্যান্সিং করে। ব্যাংকগুলো এসব উদ্যোক্তাকে সহায়তা করতে পারে। ’

নতুন ধারণা নিয়ে আসা উদ্যোগকে অর্থ পরামর্শ এবং কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। পরে শেয়ার বিক্রি করে লাভসহ বিনিয়োগ করা অর্থ তুলে নেওয়া হয়। এই ধারণাটি-ই পরিচিত ‘ভেঞ্চার ক্যাপিটাল’ নামে।
 
সার্চ ইঞ্জিন গুগল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবক ও টুইটারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থায়নে। বাংলাদেশেও নতুন উদ্যোগে বিনিযোগের জন্য নিবন্ধিত হয়েছে ১১ টি প্রতিষ্ঠান।

বিআইবিএম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বাজার এখন ৫০ বিলিয়ন ডলারের। যার ৬৬ শতাংশই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দখলে। এরপরেই চীন ও ভারতের অবস্থান। সফলতার উদাহরণ রয়েছে বাংলাদেশেও।
 
বিকাশ, সহজডটকম, ডক্টরলার মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থায়নে। তবে এসব প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ এখনও আটকে আছে ৩০ কোটি ডলারে। বিনিয়োগ বাড়াতে পুজিবাজারকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
 
এ প্রসঙ্গে বিআইবিএম-এর পরিচালক (প্রশিক্ষণ) আহসান হাবীব বলেন, নতুন কোনো উদ্যোগ ১০-১২ বছর ম্যাচিউরড হয়ে গেলে অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান বের হয়ে যাবে। আর বের হয়ে যাওয়ার উপায় হলো পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রি করা। কারণ এমনিতেই কোনো মানুষ ওই প্রতিষ্ঠান কিনতে যাবে না।
 
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পুঁজিবাজার ও মূলধন বাজার উন্নয়ন করতে হবে। না হলে শুধু ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে অর্থায়ন করলে এককভাবে এটি সফল হবে না।
 
প্রতিবেদন বিষয়ে আহসান হাবীব বলেন, বিআইবিএম মনে করে নতুন করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। যা তৃতীয় কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করতে পারে তারা।
 
তিনি বলেন, একটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থায়ন করে না। কারণ উদ্যোক্তার বিপণন ব্যবস্থা ভালো নয়। বাজারে প্রচারের জন্য তার সক্ষমতা নেই। এক্ষেত্রে ব্যাংক নিজে অর্থায়ন না করে একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বা গ্রুপ তৈরি করে উদ্যোক্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে।  

পরবর্তীতে কোম্পানিটি আর্থিকভাবে দাঁড়ালে ব্যাংক সরাসরি অর্থায়ন করতে পারে বলে মনে করেন আহসান হাবীব।
 
এদিকে বেসরকারি খাতের এসব উদ্যোগকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে একটি সুনিদিষ্ট নীতিমালা করারও তাগিদ দিয়েছে বিআইবিএম।
 
জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী জামানত ছাড়া বড় কোনো উদ্যোগে না ব্যাংক ঋণ দিতে পারে না।

তবে নতুন যারা উদ্যোগ নিচ্ছেন তাদের ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমেই ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে হবে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৯
এসই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।