ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ বাজেট

গৌতম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ বাজেট প্রতীকী

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিটি বাজেটই রেকর্ড ভেঙেছে। এবার তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেটেও এর ব্যতিক্রম হবে না। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের আকার হতে যাচ্ছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর বাজেটের আকার চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে আসন্ন অর্থবছরে বাজেটের আকার বাড়ছে ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।

সম্ভাব্য বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা বেশি।

বাজেটের এই ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎসের ঋণই মূল ভরসা। এ ঋণ ব্যাংকিং খাত ও সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হবে। এছাড়া নতুন বাজেটে সম্ভাব্য মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা (জিডিপির ১৩.১ শতাংশ)। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) খাতে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা (জিডিপি’র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ) ধরা হয়েছে।  

আসন্ন বাজেটে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও মূল্যস্ফীতির চাপ ৫.৫ শতাংশে আটকে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

‘সমৃদ্ধির সোপানে বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের’ শিরোনামের খসড়া বাজেট প্রস্তাব বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম বাজেট।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিবার বাজেট ঘোষণার আগে চমকের কথা বলা হলেও নতুন বাজেট, পুরনো কাঠামো হওয়ায় বাজেট প্রস্তাবের পর কোনো চমক দেখা যায় না। দেশে এমনিতে অর্থনীতির আকার বাড়ছে। বাজেটের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সম্পদের পুনর্বণ্টন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আয় বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি। এই লক্ষ্য পূরণে প্রতি অর্থবছরে বাজেটের আকার বাড়ছে। কিন্তু কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই বলা যায় আসছে বাজেটও হবে গতানুগতিক বা ভারসাম্যপূর্ণ একটি বাজেট।  

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য শামসুল আলম বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা আছে। তাই সরকারের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষা একই রকম। এজন্য বাজেটে নতুনত্ব খোঁজা ঠিক হবে না। বাজেটে সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। এটি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশে উন্নীত করতে হলে রাজস্ব খাতে ব্যাপক হারে সংস্কার করতে হবে। আগামী অর্থবছর থেকে নতুন ভ্যাট আইনের সফল বাস্তবায়ন প্রয়োজন। প্রয়োজন ব্যাংক খাতের সংস্কার। এজন্য বাজেটে একটি দিকনির্দেশনা থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন।  

বাজেটের আকার: প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১৮ দশমিক ১ শতাংশ। চলতি বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ছে ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার থেকে নতুন বাজেট ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।

জিডিপি আকার: আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার ধরা হচ্ছে ২৮ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি বাজেটের তুলনায় ২ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরে জিডিপির আকার ধরা হয় ২৫ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। আর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি ৭.৮ শতাংশ ধরা হলেও ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতির চাপ ৫.৫ শতাংশে আটকে রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

এডিপি আকার: আগামী অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ৩০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল এডিপিতে বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সেই তুলনায় নতুন অর্থবছরের এডিপির আকার বাড়ছে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ। নতুন এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৫৬৪টি। গুরুত্ব বিবেচনায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে।  

বাড়ছে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এটি জিডিপির ১৩ দশমিক ১ শতাংশের সমান। চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। সে হিসেবে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। যেখানে কর রাজস্ব ৩ লাখ ৪০ হাজার ১শ কোটি, করবহির্ভূত রাজস্ব ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার ৭শ’ ১০ কোটি টাকা। আসছে বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত করের পরিমাণ ধরা হচ্ছে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এনবিআর বহির্ভূত করের পরিমাণ ধরা হচ্ছে ১৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক অনুদান ধরা হচ্ছে ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা।

বাজেটের ব্যয়: আসছে বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হচ্ছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে দুই লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে।

বাড়ছে বাজেটের ঘাটতি: বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। যা চলতি অর্থবছরের বাজেটের থেকে ২০ হাজার ৮৭ কোটি টাকা বেশি। এটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের ঘাটতি ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি পূরণে বৈদেশিক উৎস থেকে নিট ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হতে পারে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এর পরিমাণ ৫০ হাজার ১৬ কোটি টাকা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নিট ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা নেওয়া হবে। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা (চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এর পরিমাণ ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা) এবং সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা (চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এর পরিমাণ ২৬ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা) নেওয়া হতে পারে। এছাড়া অন্যান্য খাত থেকে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে তিন হাজার কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরে একই পরিমাণ রয়েছে।

বাড়ছে ভর্তুকি: আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও ঋণ খাতে বরাদ্দ বাড়ছে। এসব খাতে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটে এ বরাদ্দ ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা বেড়ে হচ্ছে ৫০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। যা পদ্মাসেতুর মোট ব্যয়ের প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি থাকছে ৩২ হাজার ১০০ কোটি টাকা, প্রণোদনা ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, নগদ ঋণ সহায়তা থাকছে ৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়লেও প্রণোদনা ও নগদ ঋণে বরাদ্দ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

বাড়ছে না করমুক্ত আয়ের সীমা: পেশাজীবী-ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সব মহলের দাবির পরও আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি-শ্রেণীর করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরেও আড়াই লাখ টাকা বেশি বার্ষিক আয় হলে আয়কর দিতে হবে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের পর থেকে ব্যক্তি-শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি, আড়াই লাখ টাকাই রয়েছে। এর আগে প্রায় প্রতিবছরই এই সীমা বাড়ানো হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২ লাখ এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়।  

রেমিট্যান্স প্রেরণে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা: প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দেওয়া হবে। প্রবাসীরা বছরে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাবেন তার ওপর ২ শতাংশ হারে এ সুবিধা দেওয়া হবে। এজন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। আগামী বাজেটে এ বিষয়ে ঘোষণা থাকছে।  

ভ্যাট আইন কার্যকর: আগামী ১ জুলাই থেকে বহুল আলোচিত ভ্যাট আইন কার্যকর করা হবে। এটি কার্যকর হলে আগামী বছর রাজস্ব আয়ে গতি আসবে। এজন্য ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে পুরনো আইনের আদলেই নতুন মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আইন হচ্ছে। পুরনো আইনের সাতটি হারের পরিবর্তে নতুন আইনে সব মিলিয়ে পাঁচটি ভ্যাট হার হচ্ছে। এই হারগুলো হলো-পণ্য বা সেবা আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ, উৎপাদনে ১০ শতাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ৭.৫ শতাংশ, খুচরায় ৫ শতাংশ  এবং পণ্য বা সেবায় ট্যারিফ মূল্যে ২ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ হবে। এছাড়া ১ হাজার ৯৮৩টি পণ্যে মূসক অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।  

রপ্তানিতে সহায়তা: রূপকল্প বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় করতে চায় সরকার। এজন্য রপ্তানিতে উৎসাহী করতে উদ্যোক্তাদের আগামী ১ জুলাই থেকে রপ্তানিকৃত সব পণ্যে ১ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। বর্তমান ৪৫টি পণ্য রপ্তানির ওপর নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

মেগা প্রকল্পে বাড়ছে বরাদ্দ: উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেটে বড় অবকাঠামো প্রকল্পে হাত খুলে অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। পদ্মাসেতু প্রকল্পে নতুন করে বরাদ্দ পাচ্ছে ৫ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পে ৪০০ কোটি টাকা, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্পে এক হাজার ৩৫০ কোটি টাকা, গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রকল্পে (বিআরটিএ) ৪৫৬ কোটি টাকা, ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের (লাইন-৬) ৭ হাজার ২১২ কোটি টাকা, ঢাকা শহরের সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা প্রকল্পে প্রায় ৮২ কোটি টাকা, ‘সাপোর্ট টু ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি’ প্রকল্পে  ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা, ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (লাইন-১) প্রকল্পে ১৬৮ কোটি টাকা, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ৬০ কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকিং খাত, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্রে সংস্কারের প্রস্তাব করা হলেও প্রতিবারই কিছু পরিবর্তন করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো উদ্যোগ থাকবে বেকারদের জন্য ঋণ তহবিল (স্ট্যাট আপ ফান্ড)। এ তহবিল থেকে স্বল্পসুদে সহজ শর্তে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে পারবেন বেকাররা। কৃষকের জন্য ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে চালু করা হবে শস্যবিমা। নতুন উদ্যোগের মধ্যে থাকছে প্রবাসীদের জন্য বিমা সুবিধা। সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আসন্ন বাজেটে উপকারভোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ বাড়িয়ে ৮৭ লাখে উন্নীত করা হবে। আসছে বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ হাজার টাকা বাড়িয়ে ১২ হাজার টাকা করা হচ্ছে। দেশের দরিদ্র ১৫ হাজার ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সুবিধা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। বরাদ্দ বাড়ানো হবে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে। এছাড়া বাজেটে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী পালনের প্রতিফলন থাকবে।

স্বাধীনতার ৪৮ বছরে জাতীয় বাজেটের আকার বাড়তে যাচ্ছে প্রায় ৬৭০ গুণ। বাংলাদেশের বাজেট ৭৮৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে আগামী অর্থবছরে নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত ১০ বছরে বাজেটের আকার বেড়ে হয়েছে সাড়ে চার গুণেরও বেশি। বাজেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ঘাটতিও। তবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছর ২০২১ সালের মধ্যে এই বাজেট ৭ লাখ কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের। ওই সময়ের মধ্যে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দুই অংকের ঘরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
জিসিজি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।