ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আমনের ভরা মৌসুমে খুলনায় বাড়ছে চালের দাম

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
আমনের ভরা মৌসুমে খুলনায় বাড়ছে চালের দাম

খুলনা: খুলনায় হঠাৎ করে বেড়েছে চালের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। আমনের ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মিল মালিকদের দুষছেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনার খুচরা ও পাইকারি বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি চালের দাম কেজিপ্রতি ১-১০টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। হঠাৎ চালের দামের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ।

চালের দাম বাড়ার জন্য মিল মালিকদের দুষছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, মিলাররা হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় বেশি দামে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

তবে মিল মালিকরা বলছেন বাজারে ধানের দাম বেশি। এছাড়া মিলের অন্যান্য খরচ ধরেই চাল বিক্রি করায় কিছুটা বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার দাবি করছেন সবশ্রেণির ক্রেতারা।

হঠাৎ করে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা জানিয়েছেন, শ্রমের দাম না বাড়লেও চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের মধ্যে কিছুটা নাভিশ্বাস উঠেছে। চালের দাম আরও বাড়লে তারা চরম বিপাকে পড়বেন।

বড়বাজারের চাল ক্রেতা নিয়ামুল বারী বাংলানিউজকে বলেন, এতদিন চালের বাজার ঠিক থাকলেও কয়েকদিন ধরে চালের বাজারে দর বাড়ছে। পরিবারের খরচ মেটাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছি। আমন মৌসুমে যদি চালের দাম এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে সামনে তো হাহাকার পড়ে যাবে।

আব্দুল্লাহ নামের এক রিকশাচালক জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেশি। এরই মধ্যে চালের দাম বাড়ছে। এ কারণে সংসার চালাতে গিয়ে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রচণ্ড শীত আবার বৃষ্টিতে ভিজে ঠিক মতো রিকশা চালাতে পারছেন না।

চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মিল মালিকরা হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় তাদের বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।

মহানগরীর বড় বাজারের মেসার্স মুরাদ ট্রেডিংয়ের পাইকারি বিক্রেতা জিয়াউল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে প্রতি কেজি বালাম চাল ৩২ থেকে বেড়ে ৩৬ টাকা, মিনিকেট ৪৩ থেকে ৪৮ টাকা, বাসমতি ৪৪ থেকে ৫৪ টাকা, স্বর্ণা ২৪ থেকে ২৭ টাকা, ভাইটাল ৩৬ থেকে ৪১ টাকা, মোটা আতপ ১৮ থেকে ২৪ টাকা, চিকন আতপ ২৭ থেকে ৩৩ টাকা ও চিনি গুড়া (পুরাতন) ৯৪ থেকে ১০২ টাকা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে দক্ষিণাঞ্চলের ধান নষ্ট হয়েছে। অসময়ের বৃষ্টিতেও অনেক ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়ে গেছে। যে কারণে মিল মালিকরাও চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বড় বাজারের দিনাজপুর ভান্ডারের বিক্রেতা মো. ফারুক বলেন, চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে কী কারণে বাড়ছে তা জানি না। এ বিষয়ে মিল মালিকরা ভালো জানেন।

মিল মালিকরা জানিয়েছে, ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের দাম বাড়ছে।

যশোর জেলার নওয়াপাড়ার এ রহমান পরশ অটো রাইচ মিলস লিমিটেডের বিক্রয় কর্মকর্তা গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস বলেন, ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের দাম বেড়েছে। ধান তো পাওয়াই যাচ্ছে না। যে ধান ৬৮০-৭০০ টাকা ছিল তা এখন ৮৫০ টাকা হয়েছে। প্রতি মণ ধানে ১৫০ টাকা দাম বেড়েছে।

খুলনা ধান-চাল বণিক সমিতির সভাপতি মনির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ধানের দাম একটু বেড়েছে। তবে বেশি বাড়েনি। মিনিকেট, ২৮, বাংলামতি এগুলো এপ্রিল মাসের ধান। যা এসময় একটু কমে আসে। যে কারণে এসব চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। ধানের দাম কিছুটা বাড়ায় চালের দামও বেড়েছে।  

‘এছাড়া এই ভরা শীতেও চার দিন বৃষ্টি হয়েছে। যা খুবই সমস্যার। এ রকম বৃষ্টি তো হয় না। দুই একবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। এবারের এ বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। যার প্রভাব চালের বাজারে কিছুটা পড়ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২০
এমআরএম/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।