ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনা: চলচ্চিত্রশিল্পে শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
করোনা: চলচ্চিত্রশিল্পে শতকোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব বিনোদন থমকে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পেও। করোনার কারণে ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। দীর্ঘদিন ধরে সঙ্কটময় সময় পার করা ইন্ডাস্ট্রি করোনা মহামারি সংকটে আরও পিছিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে ১০ থেকে ১৫টি চলচ্চিত্রের মুক্তি স্থগিত হয়েছে। এছাড়া অর্থ ব্যয় করে শুটিংয়ের প্রস্তুতি নিয়েও শিডিউল পেছাতে হয়েছে অনেক চলচ্চিত্রের।

বন্ধ হলগুলোর মধ্যে যেগুলো খোলার সম্ভাবনা ছিল, পিছিয়েছে সেগুলোর তারিখও। সব মিলিয়ে বড় অংকের ক্ষতির মুখে পড়েছে এই শিল্প মাধ্যমটি।

এ বিষয়ে রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলের কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বাংলানিউজকে বলেন, সিনেমা যে একটি খারাপ অবস্থান থেকে উঠে আসছিল, রাইজ করছিল, আমার মনে হয় এই করোনা ভাইরাসকালীন সময়ে দীর্ঘ বন্ধের কারণে তা আবার ভেঙে পড়বে। একইসঙ্গে আমি মনে করি যে, এর প্রভাবটা খুব খারাপভাবে পড়বে। বন্ধ হলগুলোর মধ্যে যেসব হলগুলো খোলার একটা সম্ভাবনা ছিল, সেগুলোও মনে হয় আর খুলবে না।

এদিকে প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ থাকায় অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা চলচ্চিত্রগুলো। আটকে গেছে চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করা অর্থের প্রায় ৯০ ভাগ। আর এতে শতকোটি টাকারও উপরে ক্ষতি হবে বলে মন্তব্য প্রযোজোকদের।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ১০ থেকে ১৫টা ছবি মুক্তির অপেক্ষায় ছিল। এগুলো সবই বড় বাজেটের চলচ্চিত্র। এগুলো মুক্তি পায়নি। সব মিলিয়ে আমাদের চলচ্চিত্রে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকারও উপরে।

বন্ধ সিনেমা হল।  ছবি: ডি এইচ বাদলদীর্ঘদিন থেকেই নানা সংকট ও সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশের চলচ্চিত্র শিল্প। এর উপর করোনা সৃষ্ট পরিস্থিতিতে যেন একেবারেই স্থবির হয়ে পড়েছে এই শিল্প মাধ্যম। আর এই মুহূর্তে অন্যদিকে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ না করলে চলচ্চিত্র শিল্পে আবারও দুর্দিন ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন পরিচালকরা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বাংলানিউজকে বলেন, যারা চলচ্চিত্রে ইনভেস্ট করেন তারা কেউ বিদেশ থেকে এসে ইনভেস্ট করেন অথবা এখানকার কোনো শিল্পপতি। করোনা ভাইরাসের এই দুর্যোগের মধ্যে পড়ে হয়তো দেখা যাবে তার অন্যদিকে ক্ষতি হয়ে গেছে, ফলে এখন আর সে চলচ্চিত্রে ইনভেস্ট করতে আগ্রহী হবে না এই মুহূর্তে। ফলে চলচ্চিত্র শিল্পে আবারও একটা দুর্যোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে বৈশ্বিক এই দুর্যোগে ক্ষতি হলেও মানুষের সুরক্ষার কথা বেশি ভাবছে প্রেক্ষাগৃহগুলো। এ বিষয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের সিনিয়র ম্যানেজার মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষতি তো হচ্ছেই, সারা বিশ্বেই হচ্ছে। করোনা ভাইরাস এখন একটি জাতীয় এবং বৈশ্বিক সংকট। একটি সিনেমা হল খোলা থাকলে তো সেখানে মানুষ আসবে। এই ইস্যুতে যদি আমাদের লোকসানও হয়, তবু মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষাও একটি বড় বিষয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
এইচএমএস/এইচএডি/
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।