ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

কৃষিপণ্য পরিবহনে সরাসারি রেল চালু করতে হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
কৃষিপণ্য পরিবহনে সরাসারি রেল চালু করতে হবে আলোচনায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাংবাদিক তৈমুর ফারুক তুষারসহ অন্যরা।

ঢাকা: ‘কৃষিপণ্যের মূল্য কৃষককে নির্ধারণ করতে দিতে হবে। কৃষিপণ্য পরিবহনে রেলের মালগাড়ি বগি ব্যবহারও ফ্রিজিং কম্পার্টমেন্ট চালু করা; উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে কৃষিপণ্য পরিবহনে সরাসরি রেল সার্ভিস চালু করতে হবে।’

রোববার (২৮ জুন) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা বারসিক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) যৌথ উদ্যোগে ‘করোনাকালীন কৃষি বাজেটের স্ট্রিম ইয়ার্ডে’ এক আলোচনায় এসব দাবি তুলে ধরা হয়।

‘উৎপাদক পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করলেও কৃষিপণ্যের মূল্য কৃষক নির্ধারণ করে না।

ফলে কৃষক পণ্যের ন্যায্যমূল্যের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। করোনাকালে দেশকে বাঁচাতে কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে হবে। তাদের বাঁচাতে চাইলে কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ তাদেরকেই করতে দিতে হবে। ’

এমন দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষক ও অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ।

আলোচনার শুরুতেই সূচনা বক্তব্য রাখেন বারসিকের পরিচালক ও গবেষক পাভেল পার্থ।

এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হন কৃষি পদকবিজয়ী কয়েকজন কৃষক।

আলোচনায় অংশ নেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাংবাদিক তৈমুর ফারুক তুষারসহ আরও অনেকে।

ড. এম এম আকাশ বলেন, ‘ধান কেনার ক্ষেত্রে সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে। তা কম হলেও ভালো। কিন্তু সরকার ধান খুব কম কিনছে। চাল কিনছে রাইস মিল থেকে। এতে কৃষককে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে রাইস মিলে। ফলে দাম পাচ্ছে না, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। ’

তিনি বলেন, ‘ধান উৎপাদকরাই হবেন চালকলের মালিক। সমবায় সমিতির মধ্য দিয়ে চালকল স্থাপন করতে হবে। এতে করে চালকলেই তারা ধান দিতে পারবে, তার দামও তারা পাবেন। ’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষিখাতে বৈচিত্র্য দরকার। বেশি দাম যেসব ফসলের, সেসব উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে কৃষকের। তা নাহলে কৃষকের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হবে না। ’

আলোচনায় বক্তারা কিছু দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম কৃষি উপকরণ যেমন পানি, সেচ, বীজ, শ্রমিকের মজুরি ইত্যাদির ভর্তুকি নগদ অর্থে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ওয়ালেটে প্রদান করা, বাজেটে অর্থবরাদ্দ রাখা যেন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নির্বিঘ্নে পরবর্তী মৌসুমে চাষাবাদ করতে পারেন। মহামারিতে সৃষ্ট নতুন দরিদ্র প্রাতিষ্ঠানিক ও অ-প্রাতিষ্ঠানিক বেকার ও অভিবাসী শ্রমিকদের কৃষিতে কর্মসংস্থান তৈরি করা যেতে পারে। এজন্য সব বেদখল খাস জমি উদ্ধার করা এবং কৃষি জমির সুরক্ষা নিশ্চিত করা। তরুণ ও ক্ষুদ্র কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা।

কৃষি বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যোগান শৃঙ্খলের পুনঃস্থাপন করতে হবে। এজন্য গ্রামীণ হাটবাজারের ভৌতকাঠামো, কমিউনিটি গুদাম ও সংরক্ষণ, কোল্ডস্টোরেজ ব্যবস্থা নতুন করে নির্মাণ বা উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখা। কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণে একটি জাতীয় মূল্য কমিশন গঠন করা; ধানের আগাম মূল্য ঘোষণা করা, কৃষক ও ক্ষুদ্র উৎপাদককে ধান ক্রয়ে ‘ন্যূনতম মূল্য সহায়তা প্রদান করা; কৃষিপণ্য যেমন শাক-সবজি, ফলমূল, দুধসহ পচনশীল খাদ্যপণ্য পরিবহনে ফ্রিজিং ভ্যানের ওপর শুল্ক হ্রাস করা। প্রক্রিয়াজাতকরণ উপকরণ ও কমিউনিটি হিমাগার তৈরিতে সহজশর্তে/সুদবিহীন আর্থিক সহায়তা/গ্রান্ট প্রদান করা;

জাতীয়ভাবে ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য আবহাওয়া সূচকভিত্তিক শস্যবিমার মাধ্যমে জলবায়ু ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ঝুঁকির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হ্রাস করা। আবহাওয়া কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এ বিমা পলিসি প্রস্তুত করা, প্রাপ্ত তথ্যেরভিত্তিতে বিমা দাবি পরিশোধ করা;  কৃষাণীকে অগ্রাধিকার দেওয়া; জুমচাষিদের এর আওতায় আনা; গ্রামীণ কৃষকদের লকডাউনকালে ও পরবর্তীতে ছয় মাস খাদ্য সহায়তা চালু রাখা। কৃষি প্রণোদনার টাকা থেকে বর্গাচাষি ও কৃষি-শ্রমিকদের নগদ সহায়তা প্রদান করা ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৪ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।