ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হাটে নয়, গরু বিক্রি বেশি হচ্ছে খামার থেকেই

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
হাটে নয়, গরু বিক্রি বেশি হচ্ছে খামার থেকেই খামার থেকে ক্রেতারা কিনে নিচ্ছেন পছন্দ মতো গরু, ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে মৌলভীবাজারে জমে উঠেছে খামারিদের বিক্রিবাট্টা। তবে হাটে নয়, গরু বিক্রি বেশি হচ্ছে সরাসরি খামার থেকেই।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ক্রেতাদের সচেতনায় গরু খামারিদের ফিরেছে সু’দিন।  

কোরবানির ঈদ উপলক্ষে শেষ সময়ের বেচাবিক্রির কথা উল্লেখ করে সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল শামীম বাংলানিউজকে বলেন, এখন বেচাবিক্রি অনেক বেড়েছে। প্রথম তো আমাদের এলাকার খামারিরা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা চিন্তাগ্রস্ত ছিলেন। আমরা যেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি তাহলো অনেক খামারির গরু কিন্তু খামার থেকেই বিক্রি হচ্ছে বেশি। পশু হাটে আনার প্রয়োজন পড়ছে না। ইন্টারেস্টিং (মজা) ঘটনা হচ্ছে কিছু কিছু খামারি তাদের গরু অনলাইনে দিয়ে দিয়েছেন। কিছু কিছু খামারি অনলাইনে দিচ্ছে না, তারপরও তাদেরটা বাড়ি থেকেই বিক্রি হচ্ছে।

উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আমি আমার কথাই বলি- কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমার অফিসের কয়েকজন স্টাফসহ আমি দু’টো গরু কিনেছি চার/পাঁচদিন আগে। খামারে গিয়ে খামারির গরু দেখে আমাদের পছন্দ হয়ে গেছে। আমরা অগ্রিম বায়না দিয়ে এসেছি। ঈদের আগের দিন নিয়ে আসবো। সেই খামারি কিন্তু অনলাইনে তার গরু দেয়নি। এ রকম করে অনেকই গরু কিনে নিচ্ছেন। আমার পরিচিত এক কর্মকর্তাও গ্রামের একটি খামারে গিয়ে গরু পছন্দ হয়ে যাওয়াতে আমার মতোই অগ্রিম টাকা দিয়ে এসেছেন। এটাকে আসলে অনলাইনও বলে যাবে না, আবার অফলাইনও বলা যাবে না।

এছাড়া আমাদের কাছে জেলার বিভিন্ন খামারিদের নামের তালিকাসহ মোবাইল নম্বর রয়েছে। কেউ আমাদের কাছে এসে খামারির নাম চাইলে আমরা তাকে মোবাইল নম্বর দিয়ে সহযোগিতা করি। আর এমনিতেই গ্রামে গ্রামে ঘুরলেই খামারিদের সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান এ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

হাটের পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে, ছবি: বাংলানিউজ

পশুরহাটের স্বাস্থ্যসেবা প্রসঙ্গে ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল শামীম বলেন, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে জেলায় অফলাইন হাট আছে ৩২টি। এ ৩২টি হাটের জন্য ২৫টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলোর সদস্যরা নির্দিষ্ট হাটে গিয়ে গিয়ে গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ নানা স্বাস্থ্যগত পরামর্শ দিচ্ছেন। আমরা হাট কর্তৃপক্ষকে আমাদের ডাক্তাদের মোবাইল নম্বর দিয়ে এসেছি। এছাড়া বড় বড় হাটগুলোতে আমাদের টিম সারাদিন সার্ভিস দিচ্ছে। ক্রেতার ক্রয় ইচ্ছুক গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার অনুরোধসহ কোনো অসুস্থ বা ছোঁয়াচে রোগাক্রান্ত গরু যাতে হাটে না উঠে সেগুলোও আমরা দেখছি।

সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের সফল খামারি রাজু আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এবার হাটের চেয়ে আমার খামার থেকেই গরু বিক্রি হচ্ছে বেশি। এটা অনেক ভালো হয়েছে। হাটে নিলে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। এর চেয়ে অনেক বেশি সুবিধা খামার থেকে সরাসরি গরু বিক্রি। ক্রেতারা নিজে এসে গরু পছন্দ করে অর্ধেক টাকা দিয়ে গেছেন। বাকি টাকা ঈদের আগের দিন দিয়ে যার যার গরু নিয়ে যাবেন।

১৬টি ষাড়ের মধ্যে ১০টি বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি ছয়টার মধ্যে কয়েকটির দাম কষাকষি চলছে। আজকালের মধ্যে সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে। একেকটি গরুর দাম ৪০ থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বলে জানান খামারি রাজু।   

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
বিবিবি/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।