ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মোহনায় জালের ভিড়, ইলিশ মিলছে না নদীতে

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০
মোহনায় জালের ভিড়, ইলিশ মিলছে না নদীতে ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: প্রধান প্রজনন মৌসুমের কারণে মাত্র তিন সপ্তাহ পর ১৪ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকার বন্ধ থাকছে। আর প্রধান প্রজনন মৌসুমের সময় ঘনিয়ে এলেও নদীগুলোতে দেখা মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশের।

তাই নদীমুখী জেলেদের মুখে এখনও ফুটেনি হাসি। অনেকেই জোয়ার-ভাটার সঙ্গে তালমিলিয়ে নদীতে ইলিশ শিকারে নামলেও ফিরতে হচ্ছে খালি হাতে, নয়তো জাটকা সাইজের কিছু পুরুষ ইলিশ নিয়ে।

বরিশালের হিজলার মেঘনা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা ও জেলে নুরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ইলিশের ভরা মৌসুম শেষে, প্রজনন মৌসুমের সময় ঘনিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত নদীতে ইলিশের দেখা মিলছে না। প্রতিদিন মেঘনা, কালাবদরসহ বিভিন্ন নদীর বিভিন্ন এলাকায় জাল ফেলছেন তাদের এলাকার অনেক জেলে। কেউ খুব অল্প পরিমাণে ইলিশ পাচ্ছেন, আবার কেউ একেবারেই পাচ্ছেন না। .সুমন নামে আরেক জেলে বাংলানিউজকে বলেছিলেন, তাদের এলাকার বেশিরভাগ জেলে ইলিশ শিকার করেন। কিন্তু এখন এমন দিন যাচ্ছে নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে খরচই উঠছে না। আর যাও বা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তা আকারে খুবই ছোট। এভাবে চলতে থাকলে জেলেদের অভাব অনটনের মধ্যে থাকতে হবে।

চলতি মৌসুমে নদীতে ইলিশের পরিমাণ কম জানিয়ে মৎস্য কর্মকর্তা (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, সাগর-নদীর মোহনায় জেলেরা প্রচুর জাল ফেলে রেখেছে, ফলে ওই জাল এড়িয়ে বড় আকারের ইলিশগুলো নদীতে আসতে পারছে না। নিয়মানুযায়ী মাছ শিকারের অবাধ সময় এখন, তাই এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপও নেওয়া যাচ্ছে না। তবে প্রধান প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞার সময় এসব জাল সরে গেলে মা-ইলিশ নদীতে আসবে। টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশা করা যাচ্ছে নদীতে ইলিশের দেখা মিলবে। .তিনি বলেন, নদীর যে ইলিশ তার বেশিরভাগই বরিশাল, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের এই বেল্টে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু এবারে তাও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার মোহনায় জালের বাইরে আবহাওয়া ভালো থাকার বিষয়টিও বিপরীত ভূমিকা রাখছে। আবহাওয়া একটু খারাপ থাকলে জালগুলো ওই সময়ের জন্য সরে যেতো, সাগর থেকে ইলিশ নদীতে ঢুকতে পারতো, মাছও আরও বেশি ধরা পড়তো। এখন নদীতে কিছু ছোট অর্থাৎ জাটকার কাছাকাছি সাইজের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোর বেশিরভাগই পুরুষ। এগুলো আকারে ছোট হওয়ায় সাগর মোহনায় পেতে রাখা জালের ফাঁস দিয়ে বেরিয়ে নদীতে চলে আসছে। কিন্তু স্ত্রীসহ আকার বড় ইলিশগুলো ওই জালের ফাঁসে আটকে ধরা পড়ে যাচ্ছে। এখন সাগরের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে এখন বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে চিটাগাং (চট্টগ্রাম) বেল্টে, আমাদের এখানে অর্থাৎ বরিশাল বিভাগের আওতাধীন বেল্টে ইলিশ ধরা পড়ার সংখ্যাটা কমে গেছে। এদিকে স্থানীয় খুচরা ও পাইকারি বাজারেও ইলিশের দর কমছে না। সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বরিশাল নগরের পোর্ট রোড এলাকায় বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী মো. ইয়াসিন বাংলানিউজকে বলেন, এলসি সাইজ নদীর ইলিশের দর মণ প্রতি ছিল ২৯ থেকে ৩০ হাজার টাকা। ফলে সব থেকে জনপ্রিয় এই সাইজের ইলিশ পাইকারি বাজারে ৭২৫-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। যা গেলো ২০ দিন আগেও ১শ টাকা কম কেজিদরে বিক্রি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২০
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।