ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

চালের দরে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা, বিক্রেতারা দুষছেন মিলারদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
চালের দরে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা, বিক্রেতারা দুষছেন মিলারদের চাল

ঢাকা: নিত্যপণ্যের প্রায় সব কিছুর দাম বাড়লেও এতদিন অনেকটাই স্থিতিশীল ছিল চালের বাজার। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের বাজারের চিত্রও পাল্টে গেছে।

খুচরা ও পাইকারি বাজারে কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে চালের। আর প্রকারভেদে চালের বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা।

চালের দাম বাড়া নিয়ে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, বিক্রেতারা বলছেন— দর বৃদ্ধিতে তাদের হাত নেই। চালের মিল মালিকরা দর-দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন।

রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজিতে চার টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়, আর প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পাইজাম (স্বর্ণা চাল) বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা আর প্রতি বস্তা বিক্রি ২৪০০ টাকায়। মিনিকেট কেজিতে তিন টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায় আর প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকায়। তিন টাকা বেড়ে জিরা মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা দরে আর প্রতি বস্তা ২৮০০ টাকায়। কেজিতে তিন টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতি কেজি নাজির চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায় আর ২৭৮০ থেকে ২৮০০ টাকা প্রতি বস্তা। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা দরে আর প্রতি বস্তা (২৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ টাকায়।

গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৬ টাকা কেজি দরে আর প্রতি বস্তা বিক্রি হয়েছিলো ২৩০০ টাকায়। সেই হিসাবে প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। গত সপ্তাহে পাইজাম (স্বর্ণা) বিক্রি হয়েছিল ৪৩ থেকে ৪৪ টাকায় আর প্রতি বস্তা ২১৫০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। সেই হিসাবে পাইজামের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

গত সপ্তাহে মিনিকেট কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছিল ৫৫ টাকায় আর প্রতি বস্তা ২৬৫০ টাকা দরে। বর্তমানে বস্তায় ১৫০ টাকা বেড়েছে, জিরা মিনিকেটেও বস্তায় বেড়েছে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। নাজির চালে প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। আর পোলাও চালের প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) দাম বেড়েছে ১৭৫ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত।

চালের দর বাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তাদের মতে, বাজারে একটি পণ্যের দাম বাড়লে অন্যটির দাম বাড়াতে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নামেন ব্যবসায়ীরা। আর দর বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ী মহল দুষছেন মিলকল মালিকদের। তাদের মতে, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন মিলাররা।

সার্জিনা আক্তার নামে এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল ব্যবসায়ীদের দর-দামের কাছে আমরা জিম্মি। বাজারে একটি পণ্যের দাম বাড়লে বিক্রেতারা অন্যটিরও দাম বাড়িয়ে দিতে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নামেন। একবার দাম বাড়লে সেটার দাম আর কমে না।

একই কথা বলেন আরেক ক্রেতা আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়ে ১০ টাকা আর দাম কমলে বিক্রেতা কমান ২ টাকা। এটা শুধু আমাদের দেশেই সম্ভব হয়। আবার বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান পরিচালনা করা হলেও সেটা হয় অনিয়মিত।

চাল ব্যবসায়ী ও সেলিম রাইচ এজেন্সির মালিক মো. সেলিম বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, দেশে চালের ঘাটতি নেই অথচ কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মিলাররা  দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। চালের বাজার বিশেষ করে দর-দাম সব মিলারদের হাতে। তারা দাম কমালে দাম কমে, সম্প্রতি মিলাররাই চালের দাম বাড়িয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
ইএআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।