ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

হাটে আলু নেই, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

বদরুল আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২০
হাটে আলু নেই, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা অন্যান্য সবজি থাকলেও দোকানগুলোতে আলু নেই। ছবি: বাংলানিউজ

হবিগঞ্জ: প্রশাসনের পক্ষ থেকে মূল্য নির্ধারণের পর হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ হাটে আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। ফলে আলু না কিনেই ক্রেতাদের বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

 

খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, আড়ৎ থেকে আলু নিতে হয় ৪৩ টাকা কেজিতে। অথচ ৩০ টাকার বেশি বিক্রি করলে প্রশাসন জরিমানা করে। তাই তারা এ সপ্তাহের হাটে আলু তুলেননি।

রোববার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে আজমিরীগঞ্জ হাটের শতাধিক দোকানের একটিতেও আলু পাওয়া যায়নি। অন্যান্য সবজি কিনলেও আলু ছাড়াই ক্রেতাদের বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকজন ক্রেতা ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।  

বাজারে আসা কৃষক ওয়ারিশ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, জমিতে কাজ করার জন্য প্রতিদিন বাজারে আসতে পারি না। তাই একদিনে অন্তত এক সপ্তাহের চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনতে হয়। আর আলু বেশি দিন ঘরে থাকলেও নষ্ট হয় না। কিন্তু আলুর দাম বাড়ায় এ সপ্তাহে আলু না নিয়েই বাজার থেকে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।  

বাজারের খুচরা বিক্রেতা আব্দুল কাদির বাংলানিউজকে বলেন, পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৪৩ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হয়। কিন্তু খুচরা বাজারে ৩০ টাকার বেশি দরে বিক্রি করলে জরিমানা গুণতে হয়। সে জন্য অন্যান্য সবজি বিক্রি করলেও আলু ক্রয়-বিক্রি বন্ধ রেখেছি।  

আব্দুল কাদির মতো একই কথা জানিয়েছেন আরও অন্তত দশজন দোকানি।  

আজমিরীগঞ্জ বাজারের পাইকারি বিক্রেতা (আড়তদার) শিবলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সম্প্রতি প্রশাসন আলুর পাইকারি দর ২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাইরে থেকে আলু কিনতে হয় ৪৩ টাকা দরে। আর ২৫ টাকার বেশি মূল্যে বিক্রি করলে স্থানীয় প্রশাসন দুই লাখ টাকা জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার (হাটবার) তিন হাজার ৬শ’ কেজি আলু কিনে লোকসান গুণেছি। তাই এ সপ্তাহে আলু ক্রয় করিনি।

আরেক পাইকারি বিক্রেতা আনিসুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৪৩ টাকা কেজিতে ক্রয় করা আলু কিছু বেশি দামে পাইকারি বিক্রি করেছিলাম। ক্রয় রশিদ দেখানোর পরও উপজেলা প্রশাসন আমাকে জরিমানা করেছে। তাই লোকসান এবং জরিমানার ভয়ে আলু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রেখেছি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বাংলানিউজকে জানান, কিছু ব্যবসায়ী আলু লুকিয়ে মজুদ রেখেছেন। ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে বেশি মূল্য নিয়ে তারা দোকানের পেছনে আলু বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন।  

স্থানীয় কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, আজমিরীগঞ্জের হাটে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন হাওরাঞ্চলের হাজার হাজার ক্রেতারা ভিড় করেন। কৃষক পরিবারগুলো আলুর ওপরই বেশি নির্ভরশীল। অথচ হঠাৎ করে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আলু কিনতে পারছেন না তারা। এ বিষয়ে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।