ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

৬৫ কোটি অনুদান প্রকল্পের ২৮ কোটিই বেতন-প্রশিক্ষণে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
৬৫ কোটি অনুদান প্রকল্পের ২৮ কোটিই বেতন-প্রশিক্ষণে

ঢাকা: বৈদেশিক অনুদান প্রকল্পের ৬৫ কোটির ২৮ কোটি টাকায় খরচ হবে বেতন-প্রশিক্ষণ বাবদ। অথচ প্রকল্পের ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ব্যয় হবে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতনের জন্য।

প্রকল্পের আওতায় মোট ১৫ জন কর্মকর্তার বেতন ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা।

অন্যদিকে ৬ জন কর্মচারীর বেতন ধরা হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৪১ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৮৬ জনের প্রশিক্ষণ খরচ ধরা হয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। ফলে প্রকল্পের অর্ধেক খরচই যাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও প্রশিক্ষণখাতে। ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও প্রশিক্ষণ বাবদ ২৮ কোটি ২ লাখ টাকা খরচ হবে।

এমনটাই ঘটেছে স্থানীয় সরকার বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ‘ইফিসিয়েন্ট অ্যান্ড অ্যাকাইন্টেবল লোকাল গভর্নেন্স (ইএএলজি) প্রকল্পের আওতায়।

উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে (ইউপি) কার্যকর ও শক্তিশালী করতে প্রথমে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প নিয়েছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ।

প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব (ইউনিয়ন পরিষদ অধিশাখা) মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পের ব্যয় ৫৭ থেকে ৬৫ কোটি টাকা করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ চলছে।

প্রশিক্ষণ ও বেতন বাবদ অধিক ব্যয় বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান অফিসের সচিব ও মেম্বরদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। এদের ক্যাপাসিটি বিল্ডি জরুরি। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করতে স্থানীয় প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সক্ষমতা বাড়ানো দরকার। মূলত এসব কারণেই প্রকল্পের প্রশিক্ষণ ব্যয় বেশি। প্রকল্প মূলত টেকনিক্যাল।

স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।

‘কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি)’ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় আটটি জেলার পিছিয়ে পড়া ১৬টি উপজেলা এবং ২৪০টি ইউপির সক্ষমতা বাড়ানো অন্যতম উদ্দেশ্য।

প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর। এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৬৫ কোটি ৬৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি), সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা)।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। অথচ প্রকল্পের অধিকাশ ব্যয়ই যাচ্ছে বেতন ও প্রশিক্ষণে।

এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ২শ জনের ভ্রমণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ লাখ ৩২ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় লুব্রিকেন্ট ও পেট্রোল কিনতে ব্যয় করা হবে ৭৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এছাড়া প্রকল্পে আপ্যায়ন ব্যয় ১২ লাখ ৬৪ হাজার, বার্ষিক প্রতিবেদন ও পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ব্যয় হবে ২ কোটি ৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

জেনারেল ম্যানেজমেন্ট সাপোর্ট বাবদ মোট খরচা ৪ কোটি ৮৬ লাখ ১৮ হাজার টাকা। মোটরযান রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৪৪ লাখ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি কেনা বাবদ ১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

স্থানীয় পরামর্শক বাবদ ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের আওতায় গবেষণা ও উদ্ভাবনী ব্যয় ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২০
এমআইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।