ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

আগামী তিন বছরে কানাডায় রপ্তানি আয় দ্বিগুণ করতে চাই: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
আগামী তিন বছরে কানাডায় রপ্তানি আয় দ্বিগুণ করতে চাই: বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজার প্রবেশে সহায়তার স্বীকৃতি হিসেবে এই বছর ‘এক্সপোর্ট লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ’ এর  সনদপত্র প্রদান করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্বে দেশের নয়টি শিল্প, ব্যাংক, ট্রেড চেম্বার ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে মোট ২৯ জনকে সনদপত্র দেওয়া হয়।

দি ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি), ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অফিস-কানাডা (টিএফও কানাডা) ও বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি)-এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন বানিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রধান নির্বাহী, প্রেসিডেন্ট, গবেষক, ব্যবস্থাপকগণ, উপ-পরিচালকবৃন্দ শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রশংসাপত্র গ্রহণ করেন।

পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই), বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি), ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ডিসিসিআই), এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি), এসএমই ফাউন্ডেশন (এসএমইএফ), ওমেন এন্ট্রারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডব্লিওইএবি) এবং ওমেন এন্টারপ্রেনার নেটওয়ার্ক ফর ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিওইএনডি)।

শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ব্যবসা উন্নয়নে ভূমিকার ভিক্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৬০ জন আগ্রহীদের মধ্য থেকে ৩২ জনকে অনলাইন প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করা হয়। এই বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে প্রশিক্ষণ শেষ হয় অক্টোবরে। পরে মাণদণ্ডের ভিত্তিতে থেকে নয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে ২৯ জনকে নির্বাচন করা হয়। নির্বাচিত এই প্রশিক্ষকবৃন্দ ভবিষ্যতে দেশের সম্ভাবনাময় ব্যবসা-উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক বাজার প্রবেশে যাবতীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করবেন।

দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান-লাইট ক্যাসল পার্টনার্স-আয়োজিত এই সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার ড. খলিলুর হমান, একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল-এর সমন্বয়ক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান প্রমূখ। এছাড়া জুমভিত্তিক অনলাইন প্লাটফর্মে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রিফনটেইন, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হানি সলেম সনবল, ট্রেড প্যাসিলিশন অফিস-কানাডা এর নির্বাহী পরিচালক স্টিভ টিপম্যান।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, এটা সত্য যে, করোনা মহামারি অর্থনীতিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে। তবে এরকম পরিস্থিতিতে এসএমই খাত ও নারী উদ্যোক্তরা আমাদের জন্য বড় সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াসের কারণে অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ ব্যবসায় দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে আমি আশা করছি।

তিনি বলেন, সম্প্রতি কানাডা তার নিজ দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কারণ, প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প হিসেবে কানাডাতে পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়বে। এতে বাংলাদেশের সামনে এই খাতের রপ্তানির সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আমি আশা করছি।

তিনি বলেন, বর্তমানে কানাডা থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রতি বছর এক বিলিয়ন ডলার। এটাকে আগামী তিন বছরে আমরা প্রায় দ্বিগুণ করতে চাই। তা করতে হলে এসএমই ও নারী এন্টারপ্রেনারদের সম্ভাবনাকে আরও কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ জরুরি।

বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রিফনটেইন বলেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেসরকারি খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রজেক্ট ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে সম্ভাবনা সেদিক থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত এসএমই, অ্যাগ্রো ফুড প্রসেসিং শিল্পে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার ড. খলিলুর রহমান ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাস্তবমূখী প্রশিক্ষণের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

 ‘এক্সপোর্ট লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ’ হচ্ছে একটি সহায়তাভিত্তিক কর্মসূচি- যেটির মূল উদ্দেশ্য; দেশের সম্ভাবনাময় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজার প্রবেশে সহায়তা প্রদান। আইটিএফসি, টিএফও কানাডা ও বিপিসি’র সহযোগিতায় লাইট ক্যাসল পার্টনার্স এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০২০
এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।