ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্রিকস ব্যাংকের সদস্য হতে লাগবে ৪৬০ মিলিয়ন ডলার

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
ব্রিকস ব্যাংকের সদস্য হতে লাগবে ৪৬০ মিলিয়ন ডলার নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) ।

ঢাকা: ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রতিষ্ঠিত ব্রিকস ব্যাংক বা নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এনডিবি) সদস্য হতে বাংলাদেশের ব্যয় হবে ৪৬০ মিলিয়ন ডলার।  

উদীয়মান দেশগুলোতে অবকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থের সংস্থানকারী ব্রিকস ব্যাংকে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশও ইতিবাচক।

এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দিল্লিভিত্তিক নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে (এনডিবি) যোগ দেওয়ার বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চেয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অর্থ বিভাগের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ব্রিকস ব্যাংকে যোগদানের খরচ ও সুবিধা বিশ্লেষণ করে সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগ মতামত দেবে।  

এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগদানের বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে। অর্থনৈতিক সর্ম্পক বিভাগ সেই চিঠির আলোকে অর্থ বিভাগের মতামত চেয়েছে।

অর্থমন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে যোগদানের জন্য বাংলাদেশকে সাতটি বার্ষিক কিস্তিতে ৪৬০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হবে।

বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকের (এমডিবি) সদস্য হওয়ার কর্মসূচি সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হতে চায় কি-না তা জানতে চেয়ে চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর ভারতীয় হাইকমিশন ঢাকা থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।

চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছাড়াও অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত দেশগুলোর (ইএমডিসি) মালিকানা অন্যান্য অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতির আকারের উপর নির্ভর করবে।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিকস ব্যাংকে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষে প্রাথমিকভাবে ভোটের শক্তি বিশ্ব ব্যাংকের মতো বৈশ্বিক বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকের চেয়ে বেশি। এছাড়া এশিয়ান অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো আঞ্চলিক বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকের ভোটের ক্ষমতার কাছাকাছি যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সদস্য হওয়ার পরে বাংলাদেশ নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে একজন গর্ভনর এবং একজন বিকল্প গভর্নর নিয়োগ করতে পারবে। এছাড়া একজন নির্বাচিত পরিচালকও পর্ষদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আর্ন্তজাতিক রেটিং এজেন্সি ফিটচ এবং এসঅ্যান্ডপি কর্তৃক এএ+ রেটিং প্রাপ্ত। ফলে কম খরচে দেশি-বিদেশি মুদ্রায় প্রতিযোগিতামূলক সুদে ঋণ বিতরণ করতে পারে এনডিবি।

এনডিবির বিধি অনুসারে, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের ভোটের ক্ষমতা ৫৫ শতাংশের কম হবে না, ঋণ গ্রহণকারী সদস্যের ভোটের ক্ষমতা ২০ শতাংশ অতিক্রম করতে পারবে না এবং অ-প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের ভোটের ক্ষমতা ৭ শতাংশের বেশি হতে পারবে না।
এখন পর্যন্ত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং সাউথ আফ্রিকায় ৫০টিরও বেশি প্রকল্পে ১৫ বিলিয়নের অধিক ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে।

২০১২ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ভারত নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব করেছিল, একটি নতুন উন্নয়ন ব্যাংক গঠনই ছিল সভার মূল প্রতিপাদ্য।

পরবর্তীকালে ব্রিকস নেতারা ২০১৩ সালের মার্চে দক্ষিণ আফ্রিকার ডার্বানে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে একটি উন্নয়ন ব্যাংক স্থাপনে সম্মত হন।

সবশেষ ব্রাজিলের ফর্তালিজায় অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ব্রিকস সম্মেলনের প্রথম দিনে ব্রিকস দেশগুলো নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) প্রতিষ্ঠার চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। সেটিই ছিল ব্যাংকের আইনি ভিত্তি। তখন একটি আলাদা চুক্তির মাধ্যমে ব্রিকস দেশগুলো ১০০ বিলিয়ন ডলারের একটি রিজার্ভ স্থাপন করেছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০৬২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
এসই/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।