ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

মধু চাষে ভাগ্য বদলেছে নাছিরের

শাকিল আহমেদ, স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২২
মধু চাষে ভাগ্য বদলেছে নাছিরের মধু চাষ করে ভাগ্য বদলেছে নাছিরের

ঢাকা: বাংলাদেশের এখন শীতকাল চারদিকে সরিষা ফুলের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষা ক্ষেতের পাশে বসানো হয়েছে মৌ-চাষের কলোনি (বক্স)।

অস্ট্রেলিয়ান জাতের অ্যাপিস মেলিফেরা মৌমাছি সরিষা ফুলের পরাগায়নে সহায়তা করছে।

সরেজমিনে কথা হয় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কাশেমনগর বাজার এলাকার মধু চাষি ও আদর্শ মৌচাক প্রকল্প স্বত্বাধিকারী নাছির মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, ২০০৯ সাল থেকে তিনি এই প্রকল্প চালু করেন। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তিনি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত আছেন। তিনজন শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে প্রতিবছর সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় করেন।

নাসির জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন যেমন মাদারীপুর, জামালপুর, ফরিদপুরের গোপালগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও মানিকগঞ্জে মধু চাষ করেন তিনি। এছাড়াও তিনি গ্রীষ্ম মৌসুমে সুন্দরবন এলাকাতেও মধু চাষ করেন। সংরক্ষিত এসব মধু বাংলাদেশের বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করেন।

তিনি জানান, শীতকালে মধু চাষিরা বিভিন্ন এলাকায় যেখানে সরিষা ফুল ফোটে সেখানে অনেকগুলো কলোনি (বাক্স) ব্যবহার করে মধু সংগ্রহ করে। মধু সংগ্রহ করতে ১মাস সময় লাগে। ১ টি কলোনিতে (বাক্স) ৫ থেকে ৭ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। অন্যদিকে ফুল থেকে মধু আহরণ করছে মধু চাষিরা। আর সংগ্রহ করা মধু বাজারে বিক্রি করছেন। মৌ-চাষিরা সাতদিনে একবার ভেতর থাকা মৌ-বাক্স বের করে মধু সংগ্রহ করেন। তা স্থানীয় পর্যায়ে ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা বিক্রি করেন।

এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে মধু ব্যবসা করতে চাইলে যে কেউ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা খরচ করলেই ব্যবসা শুরু করা সম্ভব হয়। তবে ব্যবসা করতে চাইলে আগেই ট্রেনিং নিতে হবে।

মধু চাষি নাসিরের মতে, শীতকালে কলোনির (বাক্সের) ওপরে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় এবং বৃষ্টি হলে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় তা না হলে কলোনির (বাক্সের) ভেতরে পানি ঢুকে মধু নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

মৌমাছি চাষ সাধারণত আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে এবং ভালো আবহাওয়া থাকলে এক মাসেই ৪ থেকে ৫ বার সংগ্রহ করা যায়। আর প্রতিবারে একটি বাক্স থেকে প্রায় এক টিন করে মধু পাওয়া যায়। তবে মৌমাছির বিভিন্ন রকম রোগ হয়, তাই প্রতি মাসে বাক্স থেকে ট্রেগুলো বের করে মৌমাছি সুস্থ আছে কিনা দেখতে হবে। চাষ করা এসব মৌমাছিকে অনেক সময় বিভিন্ন পোকা যেমন মুম বিটল পোকা, ছাই পোকা, মদ পোকা, লাবরা পোকা ইত্যাদি আক্রমণ করে। তখন এসব পোকাদের তাড়াতে তামাক পাতা পুড়িয়ে ধোঁয়া সৃষ্টি করে পোকা তাড়াতে হয়। এছাড়াও ফরমিক এসিড পানির সঙ্গে মিশিয়ে (৫%) স্প্রেয়ের মাধ্যমে পোকা তাড়ানো যায়। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে যখন কোথাও ফুল থাকে না তখন মৌমাছিকে চিনি খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।