ঢাকা: সরকার দেশীয় সিরামিক শিল্প রক্ষা ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে উদীয়মান এ শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রোববার (০২ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তীর্ণ হলে সিরামিক সেক্টরের সম্ভবনা ও এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন এনএসডিএ’র নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা, এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন, এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, আইসিএমইবি’র প্রেসিডেন্ট মো. মামুনূর রশীদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন, বিসিএমইএ’র সাধারণ সম্পাদক ইরফান উদ্দিন ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মইনুল ইসলাম।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায় গত চার বছরে তিতাস গ্যাস কোম্পানি ১৫ শত কোটি টাকার অধিক মুনাফা করেছে। এরপরেও লোকশানের দাবি তুলে অবিবেচকের মতো আবারও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আদৌ যুক্তিসংগত বলে মনে করি না। অতীতে দাম বৃদ্ধির সময় তিতাস কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি প্রদান করে বলেছিল চাহিদা মাফিক উপযুক্ত মাত্রায় উন্নতমানের গ্যাস নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করা হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে প্রয়োজনীয় গ্যাসের প্রেসার ও মান ঠিক রেখে নিরবচ্ছিন্নভাবে উন্নতমানের গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা তিতাস কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।
সংগঠনের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সিরামিক খাতটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় আমদানি বিকল্প একটি শিল্পখাত। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় রপ্তানি এবং আমদানি-বিকল্পপণ্য হিসাবে দেশে ইতোমধ্যেই ৭০টি সিরামিক (টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যার) শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ শিল্পে দেশি-বিদেশি মোট বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার ৫ শত কোটি টাকা। এছাড়া রপ্তানিখাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ বার্ষিক প্রায় ৪ শত কোটি টাকা এ শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে প্রায় ৫ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা।
তিনি বলেন, গ্যাসনির্ভর এই শিল্পে ক্রমাগত গ্যাসের মূল্য বাড়ায় বিপাকে রয়েছেন উদ্যোক্তারা। এ শিল্প গ্যাস চালিত হওয়ায় বিকল্প কোনো জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ নেই। বিগত ১০ বছরে শিল্পখাতে প্রায় ১০০ শতাংশ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, সিরামিক শিল্পে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত গ্যাস কাঁচামালের অন্যতম একটি উপকরণ হিসেবে গণ্য হয়। যার অংশ পণ্যের মোট উৎপাদন ব্যয়ের ১১ থেকে ১২ শতাংশ। গ্যাসের মূল্য বাড়ার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই তৈরি পণ্যের মূল্য বাড়ে। কিন্তু বিদেশি পণ্যের সঙ্গে মূল্য প্রতিযোগিতার কারণে দেশীয় তৈরি পণ্যের মূল্য ইচ্ছে মতো বাড়ানো যায় না। ফলে উৎপাদককে আর্থিকক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
এমতাবস্থায়, সরকারের ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে অংশীদার হিসাবে জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধনের লক্ষ্যে গ্যাসনির্ভর সিরামিক (টেবিলওয়্যার, টাইলস ও স্যানিটারি ওয়্যার) শিল্পেগ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২,২০২২
জিসিজি/আরআইএস