ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

শতরঞ্জির জিআই স্বীকৃতি উদযাপন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
শতরঞ্জির জিআই স্বীকৃতি উদযাপন ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: রংপুরের শতরঞ্জি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) এ স্বীকৃতি দিয়েছে।

লুপ্তপ্রায় এ শতরঞ্জির পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে একে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছেন কারুপণ্যের উদ্যোক্তা সফিকুল আলম সেলিম। তার হাত ধরেই আজ বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে ‘রংপুরের শতরঞ্জি’। ১৯৯১ সালে কারুপণ্য রংপুর লিমিটেড শতরঞ্জি বিশ্ববাজারে প্রবেশ করে।

এ উপলক্ষকে উদযাপন আর নতুন প্রদর্শন কেন্দ্রের উদ্বোধন উপলক্ষে সোমবার (২৯ আগস্ট) শুক্রাবাদের নন্দিনী ভবনে নতুন প্রদর্শন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে শতরঞ্জির ঐতিহ্য, বিবর্তনের ধারাবাহিকতাসহ পুরো ইতিহাস দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য হস্তশিল্পের সম্ভাবনার জায়গাটি তুলে ধরতে পাট, বাঁশ, কচুরিপানা, কাঁসা ও লোহাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উৎস থেকে পাওয়া কাঁচামাল দিয়ে তৈরি পণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কবি ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক, শিল্পী তরুণ ঘোষ, কারুপণ্যের উদ্যোক্তা সফিকুল আলম সেলিম।

চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, কারুপণ্য দেখে আমি ভীষণ অভিভূত। কচুরিপানার ফুলটা আমার ভীষণ ভালো লাগতো। কারুপণ্য সেই পানা দিয়েই অসাধারণ পণ্য তৈরি করেছে। দেশ বিভাগের পর শতরঞ্জিটা একেবারে কমে গিয়েছিল। এখনকার তরুণ প্রজন্ম বিদেশ থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে এসে ঘুরে ঘুরে অনেক ফেলনা বস্তুকে কাজে লাগিয়ে অসাধারণ পণ্য নির্মাণ করছে। আমি বুঝতে পারছি শতরঞ্জি জিনিসটা আরও বেশি ছড়িয়ে পড়বে।

নির্মলেন্দু গুণ বৃটিশ কর্তৃক ভারত অঞ্চলের মূল্যবান সম্পদ বিলেতে চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, বৃটিশরা এ মাটির যেসব সম্পদ নিয়ে গেছে সেগুলো যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ তা এখনও আমরা ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারিনি। ব্রিটিশরা অনেক আগেই এটা বুঝতে পেরেছিল কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এগুলোর কদর বুঝতে পারিনি।

আনিসুল হক বলেন, শতরঞ্জি মানে শত ধরনের রঙ। ৩০০ কোটি টাকা সেলিম শতরঞ্জির পেছনে ইনভেস্ট করেছে। ২০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে কারুপণ্য। কচুরিপানা, হোগলা পাতা, পাট দিয়ে বোনা বাংলাদেশের এ শতরঞ্জিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দিয়েছে কারুপণ্য।

কারুপণ্যের উদ্যোক্তা সফিকুল আলম সেলিম বলেন, আমি একা কোনো কাজ করিনি। সবাই মিলে করেছি। শতরঞ্জি বাংলাদেশের বহু ক্ষুদ্র শিল্পের একটি। যে শতরঞ্জি প্রায় বিলুপ্ত ছিল এটিকে সরকার জনপ্রিয় করার চেষ্টা করেছে। আমরা উদ্যোক্ত হিসেবে সেই যাত্রায় যুক্ত হয়েছি।

আলোচনা শেষে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার পরিবেশনের সঙ্গে পরিবেশিত হয় রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ভাওয়াইয়া গান। এ সময় অন্যান্য বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০১০ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
এইচএমএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।