ঢাকা, সোমবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাথরঘাটায় ৮ দিনে ইলিশ বিক্রিতে রাজস্ব আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২২
পাথরঘাটায় ৮ দিনে ইলিশ বিক্রিতে রাজস্ব আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ইলিশ। ছবি: বাংলানিউজ

বরগুনা: ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বেড়েছে ইলিশের উৎপাদন। এক যুগে ইলিশ আহরণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বরগুনায় ৯২০০৩ কেজি উৎপাদন। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ৪০৭৫৩৪০ কেজিতে উন্নীত হয়েছে। ইলিশ উৎপাদন বাড়ায় গত ৮ দিনে সাড়ে তিন লাখ টাকার রাজস্ব আয় করেছেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন।

সোমবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা বিএফডিসির মার্কেটিং অফিসার বিপ্লব কুমার সরকার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজার বরগুনার পাথরঘাটায়।

মৎস্য বিভাগ বলছে, উপকূলের মৎস্যঘাটগুলোতে যেন ইলিশ কেনা-বেচার ধুম পড়েছে। জেলেদের ধরা এসব ইলিশ চলে যাচ্ছে ঢাকা, চাঁদপুর, বরিশাল ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৯ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধুমাত্র বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ২৫ হাজার ২৬২ কেজি ইলিশ ও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ৬২ হাজার ৯৭৬ কেজি। মোট ৮৮ হাজার ২৩৮ কেজি ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ কেনা-বেচা করে সরকারের রাজস্ব আয় অর্জিত হয়ছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৬৫৬ টাকা। এটি বিগত কয়েক বছরেও তুলনায় অনেক বেশি।

২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় ১ কোটি ৭৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩৭০ টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৯৬ টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় ৮৪ লাখ ৬০ হাজার৭৭০ টাকা। ২০২১-২০২২অর্থ বছরে রাজস্ব আদায় ১ কোটি ৬১ লাখ ৮২ হাজার ৬৩৯ টাকা।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশের কেনা-বেচায় সরগরম মাছের আড়ৎগুলো। ঘাটগুলোতে নৌকা-ট্রলার ইলিশ নিয়ে সেগুলো আড়তে রেখে আবার চলে যাচ্ছে মাছ শিকারে। তবে আড়ৎদাররা জানিয়েছেন, মাছের উৎপাদন এমন থাকলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দাম কিছুটা কমতে পারে।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বাংলানিউজকে জানান, অভিযান সফল হওয়াতে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। গত ৮ দিনেই বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকার ইলিশ। আশা করছি, এ বছর ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের তুলনায় বাড়বে। বিগত সময়ের চেয়ে ইলিশের উৎপাদনও অনেক বেশি হয়েছে।

জেলায় মাছের উৎপাদন ও চাহিদা

মাছের মোট উৎপাদন ১ লাখ ৯ হাজার ৭০ মেট্রিক টন। মাছের মোট চাহিদা ২৬ হাজার ৯৩৭ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত মাছের পরিমাণ ৮২ হাজার ১৩৩ মেট্রিক টন।

বিগত পাঁচ বছরে মাছের উৎপাদন

২০১৫-১৬ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৭৩০৩ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক ৭৪৭০০ মেট্রিক টন। মোট ৯২০০৩ মেট্রিক টন উৎপাদন। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৭৩৫৩ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক ৭৫১৫০ মেট্রিক টন। মোট ৯২৫০৩ মেট্রিক টন উৎপাদন। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৮৩৭১ মেট্রিক টন ও সামুদ্রিক ৮০০৯৭ মেট্রিক টন। মোট ৯৮৪৬৮ মেট্রিক টন উৎপাদন। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ১৯৬৭৪ মেট্রিক টন, সামুদ্রিক ৮৩৫৮২ মেট্রিক টন। মোট ১০৩২৫৬ মেট্রিক টন উৎপাদন। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে অভ্যন্তরীণ ২১২৪০ মেট্রিক টন, সামুদ্রিক ৯০১২৬ মেট্রিক টন। মোট ১০৯০৭০ মেট্রিক টন উৎপাদন।

মৎস্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে

দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩.৮৮ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩.৯৫ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৪.৯৭ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৫.১৭ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫.৩৩ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫.৫ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৫.৬৫ লাখ মেট্রিক টন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।