ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরে শিগগিরই আলোচনা: বাণিজ্যমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরে শিগগিরই আলোচনা: বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা: বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর উভয় দেশের মধ্যে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (এফটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  

তিনি বলেন, আশা করছি শিগগিরই আলোচনা শুরু করা সম্ভব হবে।

 

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার। বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়ন করা প্রয়োজন।  

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকায় সফররত সিঙ্গাপুরের ট্রান্সপোর্ট, ট্রেড রিলেশনস ও শিল্পমন্ত্রী এস ইসওয়ারান এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উভয় দেশের মধ্যে মিটিং শেষে বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সেবা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেমোরেনডাম অফ কো-অপারেশন (এমওসি) স্বাক্ষরের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ঢাকায় নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাই-কমিশনারসহ সিঙ্গপুরের ট্রেড মিনিস্টারের নেতৃত্বে আগত প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আজকে আমাদের সঙ্গে সিঙ্গাপুরের একটি মেমোরেনডাম অফ কো-অপারেশন (এমওসি) সই হলো সামনের দিকে ব্যবসা বাণিজ্যসহ অন্যান্য বিষয়ে কিভাবে এগিয়ে যাবো সেটা নিয়ে। আজকে জাস্ট শুরু হলো। আমরা সামনের দিকে তাকাচ্ছি যে আরও কতো বেশি কাজ করা যায়। উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মেমোরেনডাম অব কো-অপারেশন (এমওসি) বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের ট্রান্সপোর্ট, ট্রেড রিলেশনস ও শিল্পমন্ত্রী আজকে আমাদের অনেক কিছু মেনশন করেছেন সিঙ্গাপুরে কি কি করা যেতে পারে, সাম্ভব্যতা রয়েছে। সেজন্য আমরা একটি এমওসি সই করেছি। এমনিতেই আমরা সিঙ্গাপুর থেকে বিশাল পরিমাণ আমদানি করে থাকি। এ বিষয়ে ওদের বিশেষজ্ঞরা আছে তারা আমাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে এফটিএ করা যায় কিনা সেজন্য একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি করা।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের মধ্যে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সমঝোতা সহযোগিতা (এমওসি) সই করতে পেরে আমি সত্যিকার অর্থে খুবই খুশি। সিঙ্গাপুর আমাদের অনেক পুরনো বন্ধুদেশ। এই সমঝোতা সইয়ের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও বহুদূর এগিয়ে যাবে।  

সিঙ্গাপুরের শিল্পমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিকত সহযোগিতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। বাংলাদেশের কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর গড়ে উঠছে। বাণিজ্য ও পর্যটন বৃদ্ধির জন্য এ বিমানবন্দর খুবই সহায়ক হবে। আইসিটি খাতে সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশের পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনে প্রচারনা বৃদ্ধি করতে পারে। বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে সহযোগিতা সমঝোতা স্বাক্ষরের বিষয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক দফায় ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সমঝোতা সইয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়।  

এতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে রফতানি ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাবে এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সম্পাদনের লক্ষ্যে শিগগিরই আলোচনা শুরু করা সম্ভব হবে।

সমঝোতায় দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ১৬টি খাতে উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে; যার মধ্যে পাট ও পাটজাতপণ্য, বস্ত্র ও পোশাক, কৃষি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা, হালকা প্রকৌশল, চামড়াও চামড়াজাত পণ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবহন সরঞ্জাম, ডিজিটাল অর্থনীতি ও শিক্ষাসেবা রয়েছে। এছাড়া, এতে দুই দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এফটিএ সইয়ে আলোচনা পরিচালনার কৌশল নেওয়ার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে পরিনত হবার পর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাণিজ্যিক ভাবে সম্ভাবনাময় বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পণ্য রফতানিতে শুল্ক, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাওয়া সহজ হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
জিসিজি/এসএ
                                          

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।