ঢাকা: উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে ঢাকা মহানগরীর মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিতে চিঠি দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে অধিদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলানিউজকে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে তা মানেনি মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। দুই পক্ষ বার বার আদালতে গেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হবে এবং পড়াশোনার ক্ষতি হবে।
অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, অধিদপ্তরের ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বরের স্মারকে হাইকোর্টের রিট পিটিশন (নং- ১৫২৭২/২০২২, তারিখ: ১৫/১২/২০২২) এর নির্দেশনার আলোকে ঢাকা মহানগরীর মিরপুর থানাধীন মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা যাচাই কল্পে নির্ধারিত ছক মোতাবেক তথ্য প্রমাণসহ (এমপিওভুক্ত প্রত্যেক শিক্ষকের নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, এসএসসি/সমমান পাসের সনদের কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও প্রথম এমপিও'র কপি সত্যায়নপূর্বক) পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে এ কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষককে চিঠি দেওয়া হয়। উক্ত তথ্যাদি না পাওয়ায় এ অধিদপ্তরের চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি উক্ত তথ্যাদি তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরে পাঠানোর জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানকে তাগিদ দিয়ে পত্র দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সর্বশেষ এমপিও সিটে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে আখলাক আহমেদের নাম মুদ্রিত রয়েছে। তাই এ অধিদপ্তরের ১৭ জানুয়ারির স্মারকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আখলাক আহমেদকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রথম নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র ও প্রথম এমপিও সিটের কপি এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র, সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রথম এমপিও সিটের কপি নয় কোডে বেতন-ভাতা প্রাপ্তির লিখিত ব্যাখ্যা এবং প্রাসঙ্গিক প্রমাণগুলোর মূলকপি তিন কর্মদিবসের মধ্যে স্ব-শরীরে উপস্থিত হয়ে প্রদর্শন করার জন্য আখলাক আহমেদকে চিঠি দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও উক্ত তথ্যাদি পাওয়া যায়নি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্মারকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন (নং-১৫২৭২/২০২২; তারিখ: ১৫/১২/২০২২) এর নির্দেশনার আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্য থেকে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়। এ বিষয়েও অদ্যাবধি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
চিঠিতে বলা হয়, মামলার পিটিশনারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ (ইনডেক্স নং- ডি১৬৬০০২) ইতোমধ্যে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। সে মোতাবেক পরবর্তী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক হলেন মো. জাকির হোসেন (ইনডেক্স নং-ডি২৭০৫৭৮)।
এমতাবস্থায়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন (নং-১৫২৭২/২০২২; তারিখ: ১৫/১২/২০২২) এর নির্দেশনার আলোকে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে অধিদপ্তরকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বর্ণিত বিষয়ে চলমান মামলা-মোকদ্দমা থেকে আদালতের যে নির্দেশনা আসবে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমআইএইচ/আরআইএস