ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

শিক্ষা

জাবির অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দাবি

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
জাবির অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দাবি

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় নিহত রিকশাচালক ও আহত পরিবারের সদস্যদের ক্ষতিপূরণ এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখা।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আ র ক রাসেলের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটির সুষ্ঠু কোনো তদন্ত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আজ প্রশাসন বলছে, আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ধাক্কা দেয়নি, কাল বলবে আমাদের গাড়ি সেখানে যায়নি। এটা শুধু দুর্ঘটনা নয়, একটি খুন। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির পাশাপাশি আহত ও নিহতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

দুর্ঘটনায় আহত নারীর ভাই ফরহাদ হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় আমার পরিবারের ৪ জন আহত হয়েছে। তারা এখনও চিকিৎসাধীন। ইতোমধ্যে প্রায় ৫ লাখ টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়ে গেছে। আরও একটি অপারেশন বাকি রয়ে গেছে, এটির অর্থের যোগান এ মুহূর্তে আমাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে আমি কয়েকবার উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেছি। তার কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদনও জমা দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ সহযোগিতার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি বোনের ট্রিটমেন্টের জন্য আর্থিক সহযোগিতা চাই।

ছাত্র ফ্রন্টের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি ইমতিয়াজ অর্ণব বলেন, মেডিকেল ও অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কথা বলে আসছি। মেডিকেলে যেখানে অ্যাম্বুলেন্সের তীব্র সংকট, জরুরী প্রয়োজনে রোগীরা সেবা পায় না; সেখানে এই অ্যাম্বুলেন্স কিভাবে মদ পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা হয়? 
তিনি আরও বলেন, যে রিকশাচালক মারা গেছেন, তার পরিবার কোন অবস্থায় আছে? যে নারী সন্তান হারিয়েছে, তার কী হবে? আমরা দ্রুত এই অপরাধের সঠিক বিচার দাবি করছি এবং ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। অন্যথায় আমরা বড় কর্মসূচিতে যাব।

মানববন্ধনে সমাপনী বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, এই অ্যাম্বুলেন্স দুর্ঘটনায় মেডিকেল একটি নামকাওয়াস্তে কমিটি করেছে। যারা ভাইবার প্রেক্ষিতে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। তাদের তদন্ত থেকে জানা যায়, এই ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের কোনো দোষ ছিল না। অথচ একটি মানুষ ঘটনাস্থলেই মারা গেছে। এটা খুন। আমরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দ্রুত বিচারের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।  

তিনি আরও বলেন, প্রশাসন খুন করার পর যে উল্লাস, আনন্দ করে ভাব দেখাচ্ছে, সেটা আর থাকবেনা। আমরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি সাভারের লোকপ্রশাসন কেন্দ্র এলাকায় জাবির একটি অ্যাম্বুলেন্সের ধাক্কায় এক অটো-রিকশাচালক ঘটনাস্থলে নিহত হন। এসময় রিকশায় থাকা চার যাত্রীসহ এক অন্তঃসত্ত্বা গুরুতর আহত হন এবং তার গর্ভের সন্তান মারা যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা করা হয়নি বলে জানা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ৯, ২০২৩
ভিএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।