ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

শিক্ষা

জুতা পালিশ করতে দেরি, বিক্রেতাকে পেটালেন জাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা

জাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৬ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৩
জুতা পালিশ করতে দেরি, বিক্রেতাকে পেটালেন জাবি ছাত্রলীগের ২ নেতা অভিযুক্ত দুই জাবি ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন নাহিদ ও মেহেদী হাসান জয়। (বাঁ থেকে)

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জুতা পালিশ করতে দেরি হওয়ায় সাভারে ইসলামনগর এলাকার এক ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকার 'মেস্মেরাইজ' নামের একটি দোকানে হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতারা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান জয়। নাহিদ নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শহীদ রফিক জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র।  

মেহেদী হাসান জয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র। তারা উভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।

ভুক্তভোগীরা হলেন- দোকানের মালিক রোমেন রায়হান, দোকানের ম্যানেজার মিরাজুল ইসলাম মিরাজ ও রায়হানের  বড় ভাই নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি। রোমেন রায়হান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী৷

মারধরের ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ বাংলানিউজের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, নাহিদ ও জয় মিরাজকে দোকান থেকে বের করে আনেন ৷ পরে তাকে মারধর করেন৷ এসময় বাপ্পিকেও মারধর করতে দেখা যায়।

ভুক্তভোগী দোকান মালিক রোমেন রায়হান বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নাহিদ ও জয় আমার দোকানে জুতা কিনতে আসেন। এ সময় তাদের জুতা ওয়াশ করতে দেরি হাওয়ায় তারা আমার দোকানের ম্যানেজার মিরাজকে বলে তুই দ্রুত কাজ কর, আমাদের তাড়া আছে। কয়েকবার এ কথা বলার পরে তারা মিরাজকে বলে, তুই এত অ্যাটিটিউড দেখাচ্ছিস কেন? এ কথা বলার পর একপর্যায়ে মিরাজকে মারধর শুরু করে তারা৷ এ সময় আমার বড়ভাই বাপ্পি ঠেকাতে আসলে তাকেও মারধর করে। পরে মিরাজ ও ভাইকে নিয়ে দোকানের বাইরে আসে তারা। পরে আরেকদফা মারধর করা হয়। এসময় আমি ঠেকাতে গেলে তারা আমাকে মারধর করে। এবং তারা আমাকে তাদের অনুমতি ছাড়া দোকান খুলতে নিষেধ করেছে।  

একই অভিযোগ করেছেন আরেক ভুক্তভোগী দোকানের ম্যানেজার মিরাজুল ইসলাম মিরাজ।  

দোকান মালিকের বড় ভাই নেওয়াজ রাসেল বাপ্পি বলেন, মিরাজকে মারধর করতে দেখে আমি কারণ জানতে চাই। এসময় নাহিদ ও জয় দোকানের মধ্যে আমাকে মারধর করে। পরে দোকান থেকে বাইরে বের করে এনে আবারও মারপিট শুরু করে তারা।

মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাব্বির হোসেন নাহিদ।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দোকানিরা বহিরাগত ভেবে আমাদের থেকে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করেছে। তারা আমার ভোক্তা অধিকারও ক্ষুণ্ন করেছে। জুতা কেনার কোনো রশিদ তারা আমাকে দেয়নি৷ আমরা তাদের মারধর করিনি। তারাই আমাদের মারধর করেছে। বহিরাগত হোক আর যেই হোক না কেন কোন ক্রেতার সঙ্গে এমন ব্যবহার কখন কাম্য নয়। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

মারধর নয় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন মেহেদী হাসান জয়।  

তিনি বলেন, দোকানি আমরা তাড়াতাড়ি জুতা পালিশ করতে বললে তিনি আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। পরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়।

তিনি আরও বলেন,'ওই দোকানি যদি আমাদের নামে কোনো অভিযোগ করে তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকারের শরণাপন্ন হব। কারণ তিনি আমাদের কোনো ভাউচার দেননি এবং আমাদের ১৫০ টাকা ফেরত দেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২০ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২৩
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।