শাবিপ্রবি (সিলেট): ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দল ও একটি ফেসবুক পোস্টের জেরে মধ্যরাতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শাহপরান হল।
শনিবার (১৩ মে) দিবাগত গভীর রাতে ছাত্রলীগের পাঁচটি গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জিআই পাইপ নিয়ে মহড়া দিতে দেখা গেছে। একপর্যায়ে নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতিতে জড়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে হল প্রশাসন ও প্রক্টরিয়াল বড়ির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৩ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ করে ছাত্রলীগের পাঁচটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা শাহপরান হলে জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা পাল্টাপাল্টি মহড়া ও হাতাহাতি জড়িয়ে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রুপের মিটিং নিয়ে গত ১১ মে রাতে ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আজিজুল ইসলামের সঙ্গে তার সমর্থক ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমানের বাকবিতণ্ডা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধরের অভিযোগ এনে আজিজুলের বিরুদ্ধে হল প্রভোস্ট বরাবর অভিযোগ দেন মিজানুর। তবে পরেরদিন (১২ মে) হল প্রভোস্টের হস্তক্ষেপে দুজনের মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। পরে ১৩ মে সন্ধ্যায় ফেসবুকে মীমাংসার বিষয় উল্লেখ করে একটি পোস্ট করেন আজিজুল ইসলাম সীমান্ত।
ফেসবুক পোস্টে ‘আপত্তিকর’ শব্দ আছে উল্লেখ করে আজিজুলকে শনিবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুডকোর্টে ডাকেন ছাত্রলীগের চার গ্রুপের নেতারা। তারা হলেন- সংগঠনটির সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজিবুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সহ-সভাপতি মামুন শাহ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন মিয়া।
এক পর্যায়ে ওই ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে আজিজুলের সঙ্গে গ্রুপ নেতাদের কথা কাটাকাটি হয়। এরই জেরে আজিজুল ও বাকি চার গ্রুপের নেতাদের সমর্থকদের মধ্যে শাহপরান হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী ও শাহপরান হলের প্রভোস্ট মিজানুর রহমান খানের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনার বিষয়ে আজিজুল ইসলাম সীমান্ত গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটা সমাধান করে দিয়েছে।
এ নিয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের সঙ্গে কারো কোনো ঝামেলা হয়নি। হলে একটা বিষয় নিয়ে ছাত্রদের ঝামেলা হয়েছে। তবে সেটা সমাধান হয়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, হলের সমস্যার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যাটি সমাধান হয়ে গেছে, এখন আর কোনো ঝামেলা নেই।
সার্বিক বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সমস্যাটি নিয়ে কথা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
এনএস