ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

দেবহাটার নাংলা ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
দেবহাটার নাংলা ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

সাতক্ষীরা: জেল, জরিমানা কোনো কিছুতেই থামছেন না সাতক্ষীরার দেবহাটার নাংলা ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপার আবুল বাশার।  

অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষার্থী নয় এমন তাদের দিয়ে এবং একই ছাত্রীদের দিয়ে বারবার পরীক্ষা দেওয়ানোর মতো জালিয়াতি করে এমপিও ছাড়করণসহ বোর্ড পরীক্ষা সম্পন্ন করেন প্রতিষ্ঠানের সুপার বাশার।

এবারের দাখিল পরীক্ষায়ও তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে অন্য মেয়েদের। এসব কাজে একাধিকবার জেল ও জরিমানা হলেও থামেনি তার অপকর্ম।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের নাংলা ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসাটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর ২০২৩ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ১২ জন শিক্ষক ও তিনজন কর্মচারী সরকারি বিধি মোতাবেক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু অভিযোগ আছে, যেসব শিক্ষার্থী দেখিয়ে এমপিওর ছাড় করা হয়েছে, তা শুধু কাগজ-কলমে সীমাবদ্ধ। তারই সত্যতা মিলেছে এবারের দাখিল পরীক্ষায়। এ প্রতিষ্ঠানটিতে ১৮ জন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও প্রথম দিনে সাতজন উপস্থিত ছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনের পরীক্ষায় ওই ১৮ জনের একজনও অংশ নেয়নি। পরে খোঁজ নিলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অভিযুক্ত আবুল বাশার উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের অধিবাসী ও ঘোনাপাড়া দাখিল মাদরাসার সুপার। ২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর ঘোনাপাড়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপার আবুল বাশার জালিয়াতি করে এবতেদায়ি পরীক্ষায় নয়জনকে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে ধরা পড়েন। ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরে শতাধিক বাল্যবিয়ে দেওয়ার অপরাধে ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ও মাদরাসা সুপার আবুল বাশার গ্রেপ্তার হন। এছাড়া চেক জালিয়াতি মামলায় বেশ কিছুদিন আগে দেবহাটা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ঘোনাপাড়া রহমানিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সাত্তারকে কৌশলে সরিয়ে নিজে ওই পদ দখল করেন। এরপর পুরাতন শিক্ষকদের পরিবর্তে নতুন শিক্ষক নিয়োগের নামে চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় ভুয়া পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসানো, শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ বিক্রিসহ অসংখ্য জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে আবুল বাশারের বিরুদ্ধে।

মাদরাসার শিক্ষার্থী রাখি জানায়, এ বছর নিজে পরীক্ষার্থী হয়েও সে পরীক্ষা দিতে পারেনি। রেজিস্ট্রেশনের অজুহাতে তাকে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষায় অংশ নিতে দেয়নি। মূলত সুপার তাদের স্থলে অন্য পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পাঠান।  

এদিকে মাদরাসার সুপার আবুল বাশারের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষায় কেউ অংশ না নেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। খোঁজ নিয়ে দেখব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান জানান, অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।