ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাবির নিয়োগ পরীক্ষা

জনাব আলী, রাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১২
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাবির নিয়োগ পরীক্ষা

রাবি: উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি উচ্চ আদালতে করা একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১ আগস্ট নিয়োগ পরীক্ষার ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত।



ওই আদেশে রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে বলা হয়।

কিন্তু, ১ আগস্ট এমন আদেশ জারির ১০ দিনের মাথায় শনিবার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষা নেয় রাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে গত ১ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি মামুনুর রশিদ ও বিচারপতি এম এ জেড সিদ্দিকীর আদালতে রিট আবেদন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া নিম্নমান সহকারী মাসুদুর রহমান।

৮ বছর আগে অস্থায়ী নিয়োগ পান মাসুদুর রহমানসহ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ১শ ১০ জন অস্থায়ী কর্মচারী। তাদের চাকরি স্থায়ী না করে ওইসব পদেই আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রশাসন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বঞ্চিত কর্মচারীদের পক্ষে মাসুদুর রহমান উচ্চ আদালতে রিট আবেদনটি করেন।

শুনানি শেষে আদালত আদেশ দেন যে, রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে।

একই সঙ্গে ২০০৯ সালের পর থেকে নিয়োগ দেওয়া ২শ ৭৫ জন কর্মচারীর নিয়োগ কেন অবৈধ হবে না, তা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ৩ সপ্তাহের রুল জারি করেন আদালত। আদালতের এ আদেশ বুধবার জারি হয়।

বাদীর আইনজীবী ওইদিন তা ফ্যাক্সযোগে বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠিয়েও দেন। কিন্তু এরপরও আদালতের আদেশ আমলে না নিয়ে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের পরীক্ষা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তৃতীয় শ্রেণির পদমর্যাদার নিম্নমান সহকারী, উচ্চমান সহকারী ও হল তত্ত্বাবধায়ক পদে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বিজ্ঞান ভবনের কয়েকটি কক্ষে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন কয়েকশ চাকরি প্রার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় সংস্থাপন দপ্তরের উপ-রেজিস্ট্রার আব্দুল মজিদ নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪টি পর্যায়ে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ’

তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কেন এ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে, এমন প্রশ্নে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আমিনুল হক সাংবাদিকদের জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশ না মানার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আদালত অবমাননা করলো। এটি নিয়ে নতুন করে আইনের আশ্রয় নেবো।

অপর রিট আবেদনকারী মাসুদ সাংবাদিকদের জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন কার্যক্রম সত্যি ভাবনার বিষয়। প্রশাসন আদালতের আদেশ অবমাননা করেছেন।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী ও তার আইনজীবীর এমন বক্তব্য মানতে নারাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারী দাবি করেছেন, তারা এখনও আদালতের কাছ থেকে এমন স্থগিতাদেশ বিষয়ে কোনো দাপ্তরিক চিঠি পাননি।

তিনি বলেন, ‘চিঠিই যেহেতু পাইনি, কাজেই আদালত অবমাননার কোনো প্রশ্নই আসে না। এমন আদেশের চিঠি এলে আমরা অবশ্যই আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবো। ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পরামর্শক অধ্যাপক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমরা আদালতের আদেশ পেলে তখন সেই বিষয়ে যথাযথ সদুত্তর দেবো। ’

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা,  আগস্ট ১১, ২০১২
সম্পাদনা: প্রভাষ চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।