ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ক্যানসারজয়ী মাহাথিরের এসএসসিতে জিপিএ ৫ অর্জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪
ক্যানসারজয়ী মাহাথিরের এসএসসিতে জিপিএ ৫ অর্জন মাহাথির রহমান

বরিশাল: ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষা জীবন থেকে দুই বছর হারিয়ে গেলেও থেমে থাকেনি বরিশালের জিলা স্কুলের ছাত্র মাহাথির রহমান। ব্লাড ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে সে।

এতে মাহাথিরের সঙ্গে পুরো পরিবারও খুশি।

বরিশাল নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড মুন্সির গ্য্যারেজ এলাকার বাসিন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মফিজুর রহমান জামাল ও হোসনে আরা পলিন দম্পতির ছেলে মাহাথির রহমান। যমজ দুই ভাইয়ের আরেকজন মাকতুম রহমান বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী।

মাহাথির রহমান জানায়, ২০১৮ সালে ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন মায়ের সঙ্গে মার্কেটে ঘুরতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসকের কাছে গেলে জানতে পারে ব্লাড ক্যানসারে বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। এরপর থেকেই নিয়মিত চিকিৎসা চলে। তার অসুস্থতার খবর শুনে দেশে ফিরে আসেন বাবা। ভারতে একটানা ছয় মাস চিকিৎসা করেন। কোভিডের সময় তিনমাস পর পর আসা যাওয়া করতে অনেক সমস্যা হয়। তার পরেও সুস্থ হয়ে ২০২২ সালে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফরম পূরণ করেও এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি সে। এ সময় তার ও ভাইয়ের খারাপ লেগেছিল। কিন্তু করার তো কিছু ছিল না। ভাই জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।

মাহাথির জানান, ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে। যমজ ভাই মাকতুম রহমান তাকে স্টিম সেল দিয়েছে। এখন ভালো আছে সে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।  

অসুস্থ হলেও পরিবার সব সময় তাকে সাহস দিয়েছে। কখনো তারা বুঝতে দেয়নি সে অসুস্থ। পরিবার ও শিক্ষকরা সব সময় পাশে ছিল। তাদের উৎসাহে মনোবল ভাঙেনি। তাদের দেওয়া সাহস ও নিজের ওপর আস্থা ভালো ফল অর্জনে সহায়তা করেছে।  গ্লোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পাওয়ায় তার ইচ্ছা ঢাকা নরডেম কলেজে পড়ার। সুযোগ পেলে সেখানে পড়বে। নয়তো ঢাকার ভালো কোনো কলেজে পড়ার চেষ্টা করবে।

ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে জানিয়ে মাহাথির বলে, আমি তো একজন অসুস্থ রোগী। তাই চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সেবা করতে চাই।  

তার বাবা মফিজুর রহমান জামাল জানান, ভালো রেজাল্ট করায় আমরা খুশি। ভবিষ্যতে সে চিকিৎসক হতে চায়। সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করব।  

বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া জেসমিন বলেন, ক্যানসারের মতো এমন মরণব্যাধি নিয়েও এসএসসি পরীক্ষায় মাহাথিরের এমন সাফল্যে খুশি আমরা সবাই।  

তার যেকোনো প্রয়োজনে মাহাথিরের পাশে থাকার কথাও জানান তিনি।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৪
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।