ঢাকা: বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সনদধারী নিয়োগবঞ্চিতরা আগামী ১৫ জুলাই থেকে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সোমবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে ১-১৭ তম ব্যাচের নিয়োগ বঞ্চিতদের নিয়োগ কার্যকর করার দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচির ঘোষণা আসে।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সনদ পেয়েছি। এ সনদ আমাদের যোগ্যতা প্রমাণ করে। অথচ শূন্য পদ লাখের বেশি থাকার পরও আমাদের নিয়োগ থেকে বঞ্চিত করে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার সঙ্গে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা করছে এ সরকার। এ অল্প সংখ্যক নিয়োগ বঞ্চিতদের নিয়োগ না দিয়ে তাদের জীবন অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের হাহাকার ও ক্ষোভের প্রতিক্রিয়া এ সরকারকেই বহন করতে হবে।
তাদের দাবি, নিয়োগ বঞ্চিত হওয়ার পেছনে রয়েছে এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনা, সিদ্ধান্তহীনতা, নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী আইন পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন এবং সর্বোপরি সদিচ্ছার অভাব।
তারা বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি, এখানে অনেকেই আছেন যারা নন এমপিও স্কুল, কলেজ, মাদরাসা কিংবা কারিগরিতে শিক্ষকতা করছেন। কেউবা আবার খণ্ডকালীনভাবে শিক্ষকতা করছে। যারা নিয়োগ বঞ্চিত, তারা যেমন যোগ্যতাসম্পন্ন তেমনি অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। নিয়োগ দিলে নিয়োগ বঞ্চিতদের সঙ্গে সরকারও লাভবান হবে।
তারা আরও বলেন, গত ২০ মার্চ এনটিআরসিএ অফিসের সামনে পাঁচ ঘণ্টার অবরোধে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান তাদের নিয়ে গোল টেবিল বৈঠক করেন। সে সময় তিনি সমঝোতার প্রস্তাব দেন। তারা আন্দোলন ও কর্মসূচি থেকে বিরতি দিলে রোজার ঈদের পর শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাদের আলোচনায় বসার ব্যবস্থা তিনিই করবেন। শূন্য পদ লাখের বেশি, আপত্তি নেই। তিনি বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রীকে জানাবেন। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাবেন।
নেতা বলেন, তারা প্রস্তাবে রাজি হয়ে আন্দোলন ও কর্মসূচি থেকে বিরতি নেন। কিন্তু সময় অতিবাহিত হলেও চেয়ারম্যান কথা রাখতে পারেননি। তিনি এখন বলছেন, শিক্ষামন্ত্রী রাজি নন। সম্মানিত চেয়ারম্যান তার কথা রাখেননি। শিক্ষামন্ত্রী ও চেয়ারম্যান কথা রক্ষার্থে কোনো পদক্ষেপ নেননি।
তারা বলেন, তারা এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান ও শিক্ষামন্ত্রীকে জানাতে চান, ১৫ জুলাইয়ের আগে নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় মাধ্যমে নিয়োগ ঘোষণা না দিলে সেদিন থেকেই কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি চলবে।
তারা আরও বলেন, আগামী ১৫ জুলাই এনটিআরসিএ বোরাক টাওয়ার অফিসের সামনে কঠোর কর্মসূচির পালন করা হবে। ১-১৭তম পর্যন্ত নিয়োগ বঞ্চিতদের নিয়োগ কার্যকর করতে হবে, নিয়োগের ঘোষণা দিতে হবে। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি নীলিমা চক্রবর্তী, সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরিন সুলতানা, সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক দুলাল নিয়া, রাকিবুল হুদা, মাহমুদা খাতুন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গণ-সুমন দাসসহ জেলা প্রতিনিধি, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাধারণ সদস্যরা।
একদিকে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলন। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে স্থবির হয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা।
অন্যদিকে সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বাদ রেখে আগের মতোই পেনশন–ব্যবস্থা চালু রাখাসহ তিন দফা দাবিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন।
এর মধ্যেই কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিলেন এনটিআরসিএ নিবন্ধিত নিয়োগ বঞ্চিত শিক্ষক ফোরামের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০২৪
ইএসএস/আরএইচ