মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি মাদরাসার ১৫ জন শিক্ষার্থী গভীর রাতে নিখোঁজ হয়। পরে জানা যায়, এ মাদরাসায় পড়তে আগ্রহী নয় তারা।
ঘটনাটি নিয়ে শ্রীমঙ্গলে তোলপাড় চলছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি এখন ভাইরাল। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাদরাসার এক শিক্ষার্থী জানিয়েছে, মাদরাসার শিক্ষকের পিটুনির ভয়ে শিক্ষার্থীরা পালিয়ে গিয়েছিল।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক ৩টার দিকে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের মন্দিরগাঁও হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় ১৫ জন শিক্ষার্থী। পরদিন শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় তারা ট্রেনযোগে সিলেট থেকে শ্রীমঙ্গলে ফিরে আসে।
জানা যায়,মাদরাসার আবাসিকে থাকা ওই ১৫ জন শিশু-কিশোর পালিয়ে সিলেট চলে গিয়েছিল।
ঘটনার বিষয়ে মন্দিরগাঁও হাফিজিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা মুজিবুর রহমান আল মাদানী বলেন, শনিবার ফজরের পর আমার কাছে খবর এলো মাদরাসার আবাসিকে থাকা ১৫জন শিক্ষার্থীর খোঁজ মিলছে না। শুক্রবার রাত ২টা থেকে ৩টার ভেতরে তারা মাদরাসা থেকে বেরিয়ে যায়। রাত ৩টার পর থেকে সংশ্লিষ্ট অভিভাবক ও আশপাশে খোঁজ নিয়ে তাদের কারোরই সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে আমি এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ দিই এবং নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করি। অনেকের বদৌলতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, খবরটি জানাজানি হলে শনিবার দুপুরের দিকে নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তাদের অভিভাবক ও শ্রীমঙ্গলে থানায় খবর আসে যে, তারা সিলেটে আছে। পরে মোবাইলফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রীমঙ্গলে আসার অনুরোধ করলে তারা পুলিশ প্রশাসনকে নিশ্চিত করে বলে, দুপুর ১২টার পর তারা সিলেট থেকে ট্রেনযোগে শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। প্রায় ২টার দিকে নিখোঁজ হওয়া শিক্ষার্থীরা শ্রীমঙ্গল রেল স্টেশনে পৌঁছায়। এসময় মাদরাসার শিক্ষক এবং অভিভাবকরা তাদের রিসিভ করে থানায় নিয়ে যান।
হঠাৎ মাদরাসা থেকে ১৫জন শিক্ষার্থীর পলায়নের কারণ কী থাকতে পারে জানতে চাইলে মাওলানা মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা শাহজালাল (রহ.) মাজারে জিয়ারতে গিয়েছে বলে জেনেছি। তাদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলে অন্য কোনো কারণ থাকলে জানার চেষ্টা করব।
সিলেট পালিয়ে যাওয়া মাহমুদ ছানী নামের এক কিশোর শিক্ষার্থী বলে, আমরা সিলেটের হজরত শাহ জালাল (রহ.) এর মাজারে গিয়েছিলাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী বলে, পড়ালেখার চাপ এবং মাদরাসার শিক্ষকের পিটুনির ভয়ে তারা পালিয়েছিল।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, মাদরসার শিক্ষকের সঙ্গে রাগ করে তারা সিলেটে চলে যায়। ছাত্রদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, তারা জানায় এ মাদরাসায় তারা আর পড়তে চাচ্ছে না। মোবাইলফোনের কথপোকথনের সময় আমি তাদেরকে বলেছি তোমরা চলে আসো, আমরা বসে তোমাদের কথা শুনব এবং বিষয়টি দেখব।
পাঠদানের পরিবেশ আন্তরিকতাপূর্ণ করে গড়ে তুলতে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের সচেতন ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
বিবিবি/এসএএইচ