ঢাকা, শুক্রবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জবিতে খালেদা জিয়ার নামফলক পুনঃস্থাপন না ম্যুরাল?

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
জবিতে খালেদা জিয়ার নামফলক পুনঃস্থাপন না ম্যুরাল?

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ভিসি ভবনের সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নামফলক পুনঃস্থাপন ও ম্যুরাল নির্মাণের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। আগামী ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে এটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানান তিনি।

 

তবে নামফলকে খালেদা জিয়ার ছবি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করেন শিক্ষার্থীরা। নামফলকে আপত্তি না থাকলেও কোনো দলীয় ম্যুরাল চান না তারা। এ নিয়ে মশাল মিছিল করে বিক্ষোভও কর হয় ক্যাম্পাসে।  

পরবর্তীতে ১১ ফুটের ম্যুরালের পরিবর্তে ৮ ফুটের নামফলকসহ স্কেচ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।

গত ৮ অক্টোবর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়ার ম্যুরাল স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রায় ১১ ফুট দৈর্ঘ্যের ম্যুরাল স্থাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা বলতে চাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি খালেদার জিয়ার অবদান আমরাও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। আমরা চাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই তার কোনো স্মৃতি থাকুক। ফ্যাসিবাদ আমলে তার নামের যে নামফলক ভেঙে ফেলা হয়েছে সেটা সুন্দরভাবে গড়ে তোলাই হতে পারে তার স্মৃতিরক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে পথে হাঁটছেন স্বৈরাচার হাসিনার দেখানো পথে। হাসিনা যেমন স্থানে স্থানে ম্যুরাল নির্মাণ করে ব্যক্তিপূজার রীতি চালু করেছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এখন সেই পথে হাঁটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুনরায় ব্যক্তিপূজার রীতি শুরু করে তাদের রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করছে বলে আমরা মনে করছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন নতুন ব্যক্তিপূজা শুরু হচ্ছে।

এ বিষয়ে রায়হান নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে আমরা আর ম্যুরালের সংস্কৃতি চাই না, ম্যুরালের রাজনীতি চাই না। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সম্মানে একটি নামফলক থাকতেই পারে। এ সম্মানটুকু মনে হয় আমাদের দেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন,  কোনো ম্যুরাল, মূর্তি হবে না। একটি নামফলক হবে। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একটি টেরাকোটা থাকবে।

ম্যুরাল স্থাপনের বিষয়ে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে জবির শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট বিষয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. রইছ্ উদ্দিন বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে ম্যুরাল সংস্কৃতির বিরুদ্ধে। এটা কোনো ম্যুরাল নয়। শুধু ছবি সম্বলিত নামফলক।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, এটা কোনো মুর‍্যাল বা ভাস্কর্য নয়। এটা ছবি সম্বলিত ঘোষণা ফলক।  

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপদান করে তৎকালীন বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন সরকার। তার একটি নামফলক ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সেই নামফলক ভেঙে ফেলেন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।