ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে সরকার পতনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার সত্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে সাত সদস্যের একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুন্সি শামসুদ্দিন আহম্মদের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজুল হক সুপণকে প্রধান করে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হক, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী, শামসুন নাহার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নাসরিন সুলতানা, সহকারী প্রক্টর মিসেস শেহরীন আমিন ভূঁইয়াকে সদস্য এবং ঢাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তদন্ত) শেখ আইয়ুব আলীকে কমিটির সচিব করা হয়েছে।
এ কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিত বলা হয়েছে।
এর আগে একই বিষয়ে চার সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটি করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সে কমিটিতে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক মুহাম্মদ একরামুল হককে আহ্বায়ক করে ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদিয়া নেওয়াজ রিমি, সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন মোনামীকে সদস্য এবং শেখ আইয়ূব আলীকে কমিটিতে সচিব করা হয়। তাদের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। সেদিন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেদিন রাতে হলে ফিরেও ছাত্রলীগের মারধরের শিকার হন অনেক শিক্ষার্থী। এরপর ১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজা করতে গিয়ে পুলিশের হামলায় আহত হয়ে হল ছাড়েন শিক্ষার্থীরা। এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সেদিন অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সেদিনই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বয়কট করেন তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহপাঠী শিক্ষার্থীরা। পরের দিন ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। ৫ আগস্ট হল খোলার পর থেকে ছাত্রলীগের হামলায় জড়িত কেউ হলে উঠতে পারেননি। তাদের ক্লাসেও বয়কট করেছে সহপাঠীরা। হলভেদে শিক্ষার্থীরা ১৫ জুলাই হামলায় জড়িতদের তালিকাও করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গণহত্যায় সমর্থন দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তাদের বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছিল শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পদত্যাগ করা ছাত্রলীগ নেতাদের ক্লাস করা বা হলে থাকায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৪
এফএইচ/আরআইএস