ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে ছাত্রদলের পোস্টার সাঁটানোকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মিছিল করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাত ৯ টার পর থেকে কয়েকটি হলে মিছিল দিতে দেখা যায়।
আজ ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও অনুষদের আশপাশে জিয়াউর রহমানের ছবি সংবলিত পোস্টার লাগিয়েছেন ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা।
ছাত্রদলের পোস্টার লাগানোতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাত সাড়ে ৯টায় বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থীরা হল ফটকে জড়ো হন। এসময় তারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চেয়ে নানা স্লোগান দেন।
পরে সেখানে হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আ স ম আলী রেজা উপস্থিত হন এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দ্রুত পোস্টার অপসারণ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীম উদ্দিন হল এবং মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল থেকে দুটি মিছিল এসে এই শিক্ষার্থীদের সাথে জড়ো হয়। সংক্ষিপ্ত মিছিল শেষে তারা পুনরায় হলে ফিরে যান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মীর মো. আসিফ বলেন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে পোস্টার লাগিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি প্রবেশের করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের অপচেষ্টা রোধ করতে আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব।
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী মোসাদ্দিক আলি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট ছাত্ররাজনীতি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে। শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই হলে রাজনীতির পক্ষে নয়। তা সত্ত্বেও ছাত্রদল কীভাবে পোস্টার লাগাতে পারে?
রাত ১১টা নাগাদ ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ছাত্ররাজনীতির চূড়ান্ত কাঠামো আমরা এখনো দিতে পারিনি। ৭ নভেম্বর কিংবা জিয়াউর রহমানের ছবি নিয়ে আমাদের বিতর্ক নেই। তবে পোস্টার তুলে নিলে ব্যক্তির মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে।
এদিকে পোস্টার লাগানোর ঘটনায় হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, অমর একুশে হলে মিছিল হয়েছে।
এ মিছিলগুলোতে ‘পোস্টার থাকলে দেয়ালে, দুঃখ আছে কপালে’,‘ছাত্র রাজনীতির ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ স্লোগান দেওয়া হয়।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের অভ্যন্তরে, দেয়ালে বা হল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও দেয়াল লিখন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ।
ছবি তোলায় ফোন চেকের অভিযোগ
পোস্টার সাঁটানোর ছবি তোলায় ছাত্রদলের নেতারা তার ফোন চেক করেছেন বলেছেন অভিযোগ করেছেন হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের শিক্ষার্থী মো. মুশফিকুজ্জামান।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ-০২’ নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তৈরি একটি ফেসবুক গ্রুপে তিনি বলেন, ছবি তুলে চলে আসার সময় সে ভাইয়েরা (যারা ছবি সাঁটাচ্ছিলেন) আমাকে ডেকে একপ্রকার চার্জ করে যে আমি কেন ছবি তুলেছি। আমার নাম কী, সেশন কত, কত নম্বর রুমে থাকি। ভাই অ্যাগ্রেসিভ ছিলেন এবং যেহেতু আমি একা ছিলাম, তাই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে বাধ্য হই।
প্রসঙ্গত, কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলার পর ১৭ জুলাই শিক্ষার্থীরা হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাদের পিটিয়ে বের করে দেয়। এসময় সব হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২৪
এফএইচ/এসএএইচ