ঢাকা: অসাধারণ নিষ্ঠা ও দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটিয়ে পরীক্ষায় অসামান্য ফলাফল অর্জন করায় ৩৬ শিক্ষার্থীকে ‘স্কলার্স অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইউকে এক্সাম বোর্ডের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত মে/জুন ২০২৪ কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এবং পিয়ারসন এডেক্সেল কোয়ালিফিকেশনসে (‘ও’ লেভেল/আইজিসিএসই/ইন্টারন্যাশনাল জিসিএসই) ৩৬ জন শিক্ষার্থীদের স্বীকৃতি হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
যেসব শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে অসাধারণ ফলাফল অর্জন করেছে তাদের এ আয়োজনে সম্মানিত করা হয়। তাদের অসাধারণ নৈপুণ্য ও অ্যাকাডেমিক উৎকর্ষের ক্ষেত্রে পার্টনার স্কুলগুলোর নিরলস প্রতিশ্রুতির ধারাবাহিকতার কারণে শিক্ষার্থীরা জাতীয়ভাবে সর্বোচ্চ স্থান অর্জনকারীদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন।
স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আয়োজনটির উদ্বোধন করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস।
তিনি বলেন, পড়াশোনার প্রতি অসাধারণ নিষ্ঠা ও দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটিয়ে পরীক্ষায় অসামান্য ফলাফল অর্জন করেছেন এমন মেধাবী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানাই। ইউকে এক্সাম বোর্ডের যোগ্যতা অর্জন করায় তারা শিক্ষা ও অ্যাসেসমেন্টের বৈশ্বিক মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হলো। তাদের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচিত হলো। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন ও স্বপ্নপূরণের ক্ষেত্রে তাদের ভবিষ্যৎ সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।
এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন ১৮৯টি পার্টনার স্কুলের ১৫০ জন স্কুল লিডার। তারা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্কিং ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিল ও স্কুল লিডাররা দেশজুড়ে ব্রিটিশ কারিকুলাম আরও সমৃদ্ধ করে তোলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
স্বাগত বক্তব্যের পর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের এক্সামস ডিরেক্টর ম্যাক্সিম রাইম্যান।
তিনি বলেন, কৃতি শিক্ষার্থীদের অর্জন উদযাপনে, শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনে তাদের অনুপ্রাণিত করতে এবং বাকিদের একই ধরনের অর্জনে উৎসাহিত করতে স্কলার্স অ্যাওয়ার্ডের আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে প্রত্যেকের পরিশ্রমের স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও অ্যাকাডেমিক সাফল্যের সংস্কৃতির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পাশাপাশি এ আয়োজন আগামী প্রজন্মের শিক্ষাক্ষেত্রে নেতৃত্বের বিকাশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তা আমাদের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির অংশ। আমরা সব শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানাই। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্ব আগামীতেও বজায় থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।
আয়োজনে ব্রিটিশ কাউন্সিল ইংলিশ অ্যান্ড এক্সামস ইন সাউথ এশিয়ার রিজিওনাল বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর তালাল মীর পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের সুযোগ উন্মোচিত করতে এবং তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পার্টনার স্কুলগুলোর সাথে ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন।
আয়োজনে বক্তব্যের পর কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ সময় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এএস (অ্যাডভান্সড সাবসিডিয়ারি) পরীক্ষার ক্ষেত্রে তাদের পছন্দনীয় একটি বিষয়ে স্পন্সরশিপ পাবে বলে ঘোষণা দেয় ব্রিটিশ কাউন্সিল।
পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্যে মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ফারিহা তাসনিম বলেন, অনেক তরুণ মেধাবীকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে, এমন একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। জীবনের এই প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিতে আমি মহান সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ, আমার শিক্ষকদের প্রচেষ্টা, বন্ধু-বান্ধবের অনুপ্রেরণা ও পরিবারের পাশে থাকার প্রতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আগামীর উজ্জ্বল তারকাদের অসামান্য অর্জনকে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের জন্য এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করায় আমি ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার এতদিনের পরিশ্রম সার্থক হওয়ায় আমি সত্যিই উচ্ছ্বসিত।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মাশা ইসলাম। পরে সমাপনী বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান শেষ করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট সারওয়াত রেজা।
ব্রিটিশ কাউন্সিল এ অনুষ্ঠানে পিয়ারসন এডেক্সেলের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও নেপালের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল মানুন বিন কুদ্দুস ও বাংলাদেশের রিজিওনাল ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জান্নাতুল ফেরদৌস সিগমা। এছাড়াও আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ম্যানেজার শাহিন রেজা, স্কুল নেতৃত্ব, শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
এএটি