রাজশাহী: মাগুরায় শিশু ধর্ষণের বিচার ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজশাহী। আজও বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে পূর্ব কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার (১০ মার্চ) সকাল থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ তাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। এরপর বিভিন্ন বিভাগ থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বর ও প্যারিস রোডে বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে সেখান থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে রাজশাহী-ঢাকা সড়ক অবরোধ করেন।
নারী নিপীড়ন, সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তবে তারা আধা ঘণ্টার মতো মহাসড়কে অবস্থানের পর নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন। দুপুর ১টার দিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি ও সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব।
কর্মসূচি ঘোষণার সময় তিনি বলেন, আগামী মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সারাদিন থেকে চোখে কালো কাপড় পরে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং সবাই ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নো মোর রেপিস্ট’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনলাইন ক্যাম্পেইন চালাবেন।
ছাত্র আন্দোলনের আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ধর্ষণের মামলা হলে ১৫ দিনে তদন্ত এবং ৩০ দিনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর কালক্ষেপণ কমাতে প্রত্যেক বিভাগীয় শহরে ডিএনএ সেম্পলিং মেশিন স্থাপন করতে হবে। এছাড়া বিচারকাজে কোনো রকম ফাঁকিবাজি চলবে না। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে একচুল ছাড়ও দেওয়া চলবে না।
এরপর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সোমবার দুপুর ১টার দিকে তাদের অবরোধ তুলে নেন। তবে অবরোধ চলাকালে রাজশাহী খড়খড়ি বাইপাস রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। তাই সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ওই মহাসড়কে কোনো যানজটের সৃষ্টি হয়নি।
এদিকে সোমবার একই সময়ে রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবির সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এছাড়াও রাজশাহী সিটি কলেজে ছাত্রদলের উদ্যোগেও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসব কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত ও বিচার কার্যকরের দাবি জানান। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। সহিংসতা রোধে নারী-শিশু ট্রাইব্যুনালে এসব মামলা বিচারের দাবি করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৫
এসএস/এএটি