ঢাকা: অসময়ে বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া রোধে শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। বিশেষ করে চর ও উপকূলীয় অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে এ বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্চে আয়োজিত সেমিনারে বক্তরা এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ(বিএনপিএস)ও সন্দ্বীপ, পটিয়া, কাজীপুর, উল্লাপাড়া, চট্টগ্রাম ও সিরাজগঞ্জ পাবলিক পলিসি ফোরাম ‘চর ও উপকূলীয় অঞ্চলের মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া এবং প্রজনন ও মাতৃস্বাস্থ্য: সমস্যা ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বিএনপিএস’র নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীরের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার, সেলিনা বেগম স্বপ্না এমপি, হাজেরা সুলতানা এমপি, ডা: হাবিবে মিল্লাত এমপি প্রমুখ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান সরকার সমাজকে এগিয়ে নিতে অনেক কাজ করছে। তবে দেশের কোথায় কি সমস্যা আছে তা সব সরকারের পক্ষে জানা সম্ভব না। তাই পত্রিকা বা টিভিতে যেসব প্রতিবেদন তুলে ধরা হয় তা দেখে ব্যবস্থা নেওযা হয়। এ বিষয়ে বিএনপিএস’র যদি কোনো সুপারিশ থাকে তবে লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ে জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। এ দেশের স্বাধীনতা আমাদের আলোকিত করেছে। এদেশের শিশুদের শিক্ষার আওতায় আনতে এবং মাত্র ও শিশু মৃত্যু হার কমাতে অনেক এনজিও কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যত রকম ব্যর্থতা রয়েছে তা আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো। বিশেষ করে স্কুল থেকে মেয়েদের ঝরে পড়ার বিষয়ে আমরা ভবিষ্যতে আরও যত্নবান হবো।
বক্তারা আরও বলেন, বিদ্যালয়ে ভর্তি ও ছেলে-মেয়ে বৈষম্য দূর করতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেলেও শিক্ষা ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার হার বেশ উদ্বেগজনক। বিদ্যালয় থেকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পরার হার বর্তমানে ২৭। যা ছেলেদের ঝরে পড়ার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। তবে চর ও উপকূলীয় অঞ্চলে মেয়েদের ঝরে পড়ার চিত্র আরও শোচনীয়।
মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হার বিষয়ে সেমিনারে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমলেও চর ও উপকূলীয় অঞ্চলের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অপেক্ষাকৃত দূর্বল স্বাস্থ্যসেবা, দূর্গম এলাকায় ডাক্তারদের অনুপস্থিতি, গাইনি ডাক্তার না থাকা, অপারেশন সুবিধা না থাকা, অ্যাম্বুলেন্স না থাকা, অপ্রশিক্ষিত দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসব এবং মেয়েদের সংকটাপন্ন অবস্থায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জেলা সদরে যাতায়াতের অসুবিধার কারণে পথেই অনেক মায়ের মৃত্যু হয়।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের দেশে মাতৃ মৃত্যু হার কমানোর জন্য ৬৫ শতাংশ নিষ্ক্রিয় কমিউনিটি হাসপাতালগুলো সক্রিয করতে হবে, সেখানে লোকবল ও সেবা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে, সেখানে প্রশিক্ষক ও দক্ষ টেকনিশিয়ান নিয়োগ এবং অ্যাম্বুলেন্সসহ সকল সেবা সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণে পর্যাপ্ত বাজেট দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৩