ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে মেধাবীদের এগিয়ে যেতে হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৪
অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে মেধাবীদের এগিয়ে যেতে হবে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ

রাজশাহী:  ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশকে স্বাধীন করতে পারলেও দেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আজও পুরোপুরি অর্জন কর‍া সম্ভব হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ।

শনিবার দুপুরে উপজেলার ভবানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও প্রাথমিক সমাপনীতে কৃতি শিক্ষার্থী ও গুণিজন সম্মননা  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন তিনি।



তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা দেশকে স্বাধীন করতে পারলেও দেশের সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আজও আমরা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি। তোমাদের সে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু সবসময় একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলেন। তোমরা তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সক্রিয় অবদান রাখবে।

এসময় মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী অঞ্চলের অবদান তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন- এপ্রিল মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য মাস। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারির মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয়। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে।

রাষ্ট্রপতি আদুল হামিদ বলেন, সংবর্ধনা একদিকে যেমন তোমাদের অর্জনের স্বীকৃতি দিচ্ছে, তেমনি ভবিষ্যতে নতুন কর্মউদ্দীপনা নিয়ে তোমাদেরও লেখাপড়ায় মনোযোগী হবে। জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ সাফল্য তোমাদের ভবিষ্যত চলার পথ সুগম করবে। সাফল্য আপনা আপনি আসে না। শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে তা অর্জন করতে হয়। আজকের এই কৃতিত্ব ভবিষ্যতে তোমাদের আরও সাফল্য অর্জনে উৎসাহিত করবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, যেকোনো অর্জনের পেছনে থাকে সম্মিলিত প্রয়াস। ছাত্র-ছাত্রীদের কৃতিত্বের পেছনে রয়েছে শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা, মা-বাবাদের অন্তহীন উৎসাহ ও শিক্ষার্থীদের পরিশ্রম। প্রতিটি মানুষ কম বেশি মেধা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। অভিভাবক ও শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে সে মেধা কাজে লাগানো। আজকের সাফল্য সামনে এগিয়ে চলার পথ একদিকে যেমন উন্মুক্ত করেছে, তেমনি তার জ্ঞান অর্জনে আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।

তিনি আরও বলেন, মনে রাখতে হবে, সামনের পরীক্ষাগুলো আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে। তাই এখন থেকে ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিয়ে নিজেকে তৈরি করতে হবে। ক্লাসনোট আর কোচিং সেন্টারের সীমিত নোটসর্বস্ব জ্ঞানে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে।
   
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সালেহা ইমারত চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং রাকসুর সাবেক ভিপি প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন, সংসদ সদস্য আবদুল ওয়াদুদ দারা, আয়েন উদ্দিন ও আখতার জাহান, বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকিরুল ইসলাম সান্টু। শিক্ষার্থীদের পক্ষে শিশু শাহরিয়ার ও তিশা।
   
অনুষ্ঠানে সালেহা-ইমারত ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৪২০ জন কৃতি শিক্ষার্থী ও ১০ গুণীজনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা পাওয়া গুণীজনরা হলেন- স্বাস্থ্যে ডা. গোবিন্দ চন্দ্র সাহা, কৃষিতে বজ্রেন কুমার প্রামাণিক, বনায়নে মোল্লা আলতাফ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাংস্কৃতিতে শিল্পী এমএ খালেক, নারী শিক্ষায় শিরিন আকতার, শিক্ষায় আবদুল জলিল (মরণোত্তর), রাজনৈতিক রাখাল চন্দ্র (মরণোত্তর), শান্তি-শৃঙ্খলায় বাগমারা থানা, প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাগমারা প্রেসক্লাব।

এর আগে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ দুপুর ১২টায় হেলিকপ্টারে বাগমারা পৌঁছান। তিনি হেলিকপ্টারে গিয়ে বাগমারার উত্তর একডালা হেলিপ্যাডে নামেন। সেখান থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্স ও সালেহা ইমারত মেডিকেল সেন্টার পরিদর্শন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।