ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সাদিয়ার অন্যরকম কৃতিত্ব

আব্দুল্লাহ আল নোমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৪
সাদিয়ার অন্যরকম কৃতিত্ব সাদিয়া ইফফাত মজুমদার

সিলেট: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় অন্যরকম এক কৃতিত্ব অর্জন করলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি তরুণী সাদিয়া ইফফাত মজুমদার। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেও সিলেট এমসি কলেজ থেকে অনার্স পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন তিনি।

তার এমন সাফল্যে পরিবারসহ রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে চলছে আনন্দের বন্যা।

সাদিয়া ২০০৬-২০০৭ শিক্ষাবর্ষে এমসি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। অনার্স ১ম, ২য় ও ৩য় বর্ষের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে বিভাগের সেরা ছাত্রী ছিলেন তিনি। কিন্তু ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষার সময় তার পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেলে সাদিয়াকেও যেতে হয় তাদের সঙ্গে। যে কারণে আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তার। মাত্র একটি পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছিলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে সাদিয়া মুখোমুখি হন জীবন সংগ্রামের। চাকরি নেন একটি স্কুলে।

কিন্তু থেমে থাকেননি সাদিয়া। কখনও সুযোগ হলে দেশে গিয়ে ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার স্বপ্ন লালন করতে থাকেন মনে মনে। তাই দেশ থেকে বই নিয়ে এসে প্রস্তুতি নিতে থাকেন পরীক্ষার। চাকরির পাশাপাশি চলে পরীক্ষারও প্রস্তুতি। পরের বছর বোনের বিয়েতে অংশ নিতে বাবা মার সঙ্গে সাদিয়াও দেশে আসেন। এমন সময় পরীক্ষার তারিখও চলে আসে। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! সেই সুযোগে সাদিয়া পরীক্ষায় অংশ নেন। পরে আবার চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে।

সম্প্রতি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, এমসি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২ শতাধিক শিক্ষার্থীকে পিছনে ফেলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন সাদিয়া। অনার্সে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ১১শ’ ৫৩।

এমন সাফল্যে দারুণ খুশি সাদিয়া। এজন্য তিনি তার শিক্ষক, মা-বাবা ও সহপাঠীদের ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে বিভাগীয় প্রধান কাজী আতাউর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক জামাল আহমদের অনুপ্রেরণার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

সাদিয়ার শিক্ষক জামাল আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পিছনে ফেলে সাদিয়া দেখিয়ে দিয়েছেন, কিভাবে জীবন সংগ্রাম করেও ভালো ফল করা যায়। ১ম বছর পরীক্ষা দিলে সাদিয়া সারা দেশের মধ্যে সেরা হতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

২ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান সাদিয়া। সিলেট সদর উপজেলার সুরমা গেটের খাদিমনগর দত্তগ্রামের আবুল বাইস মজুমদার ও নূর আক্তার কোরেশী তার গর্বিত পিতা-মাতা। সাদিয়া বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস প্রদেশের ডালাস সিটিতে বসবাস করছেন। পাশাপাশি চাকরি করছেন বিশ্ববিখ্যাত কোম্পানি ওয়ালমার্টে।

অনার্স পাস করেই থেমে থাকতে চান না সাদিয়া। সুযোগ হলে আবারো দেশে এসে মাস্টার্স করার ইচ্ছা তার। তা না হলে বিদেশেই মাস্টার্স করবেন বলেও জানান সাদিয়া।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।