রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে শনিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী।
দুপুরে আয়োজিত এ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বলেন, নিয়োগপ্রাপ্ত অথচ বেতনভুক্ত কর্মচারী না হওয়ায় ইউজিসি থেকে ৪ শত ১৯ জনের চাকরির নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
তিনি বলেন, ৬ শিক্ষক-কর্মকর্তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শিক্ষক কর্মকর্তাদের পরস্পরবিরোধী মামলাও প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়কে সেশনজটমুক্ত ও শিক্ষক সংকট মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কোর্স কারিকুলাম রিভিউ করে আন্তর্জাতিক মান সম্মত করার লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশের সনদপত্র, মার্কশিট ও ট্রান্সক্রিপ্ট’র মডেল প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রতিটি অনুষদ ও বিভাগের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ও একাডেমিক শৃঙ্খলা বজায় ও সেশনজট মুক্তকরণসহ একাডেমিক কোয়ালিটি উন্নয়নে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের আপগ্রেডেশন ও পদোন্নতি নীতিমালা রিভিউ করা হয়েছে।
উপাচার্য বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে ছিল মাত্র ১৩০.১১ টাকা । ফলে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইউজিসির মাধ্যমে সরকার কতৃক ১০ কোটি প্রদান করা হয়। ফলে বকেয়া সহ বন্ধ বেতন চালু হয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির জন্য আবাসন, পরিবহন, বিদ্যুৎ বিল ব্যবস্থাপনা ও পরীক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করে এসব খাত থেকে আয়ের ব্যবস্থা করা করা হয়।
বিভিন্ন দপ্তরের মাসিক ব্যবস্থাপনা খরচ কমিয়েও আয় রক্ষা করা হয়। পরিবহন নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জ্বালানি খাতের খরচ কমানো হয়েছে ।
তিনি বলেন, ৪০তম সিন্ডিকেট সভায় বেরোবি উন্নয়ন ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে। এতে আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে দাতা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য ব্যক্তিগভাবে পারিতোষিক হিসেবে প্রাপ্ত সাড়ে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক সংকটের কারণে মেডিকেল সেন্টার ওষুধ শূন্য হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজির সাথে যোগাযোগ করে মেডিকেল সেন্টারে ৬২ লাখ টাকার ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী বিনামূল্যে বিশেষ বরাদ্দে পাওয়ানোর ব্যবস্থা হরা হয়। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নতুন অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা পেয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ও আদিবাসীদের সহায়তায় পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সাথে একটি চুক্তি করা হয়। এবং জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের সাথে দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের একটি চুক্তি হয়। ফলে ওই মন্ত্রণালয়ের কম্প্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট (সিডিএমপি) প্রজেক্টের মাধ্যমে অনুষদে একটি জিআইএস ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
উপচার্য আরো জানান, ছাত্রীদের আবাসিক সুবিধার জন্য ছাত্রী হল চালু করা হয়েছে। ছাত্রদের জন্য একটি ছাত্র হলের নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। আরেকটি নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে।
সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০১৪